খুন হননি ডিবিসি নিউজের প্রযোজক আব্দুল বারী বরং ছুরি দিয়ে নিজেই নিজের গলাকেটে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি- এমন বক্তব্য গোয়েন্দা পুলিশের। গুলশান ও আশপাশের এলাকার দেড়শ সিসি,,,
ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) জানিয়েছে, ওইদিন ছুরি কিনে গুলশান ও নিকেতন এলাকায় হেঁটে বেড়িয়েছেন বারী। একপর্যায়ে অন্ধকার পথ ধরে নিজেই চলে যান নির্জন লেকপাড়ে। সেখানে গিয়েই নিজের কেনা ছুরি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বারী”’
সেদিন রাতে মহাখালীতে নিজ মেসবাসা থেকে গোলাপি রঙের শার্ট ও থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরে বের হন বারী। এরপর কিছুক্ষণ বৈশাখী টিভি চ্যানেল ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে ঘোরাফেরা করেন। এর মধ্যে একটি গলি ধরে কিছুক্ষণ গিয়ে আবার ফিরে আসতে দেখা যায় তাকে। রাত ৯টা ১৬ মিনিটে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে একটি স্টেশনারির দোকানের সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর একটি দোকানে ঢোকেন তিনি। ওই দোকানে ছুরি না পেয়ে বারী আশপাশের বেশ কয়েকটি দোকানে যান। এমনকি একটি মোবাইল যন্ত্রাংশের দোকানেও তিনি ছুরি খুঁজতে ঢুকেছিলেন। অবশেষে পেয়েও যান ছোট একটি ফল কাটার ছুরি। ছুরিটি কেনার পর ফুটপাতের একটি খাবারের দোকানে বেশকিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন বারী!
সংশ্লিষ্ট দোকানদাররা নিশ্চিত করেছেন ফল কাটার কথা বলে বারী তাদের কাছে ছুরির খোঁজ করেন,,
ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান জানান, ওইদিন ছুরি কিনে গুলশান-১ এর বিভিন্ন সড়ক ও নিকেতন ব্রিজ এলাকার প্রধান সড়কে হেঁটে বেড়িয়েছেন বারী। তার গতিবিধি স্বাভাবিক ছিল না। সবশেষ রাত ১০টা ১ মিনিট পর্যন্ত হাঁটাচলা পাওয়া গেছে আব্দুল বারীর। এরপর অন্ধকার পথ ধরে তিনি চলে যান নির্জন লেকপাড়ে। সেখানে গিয়েই নিজের কেনা ছুরি দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বারী। ঘটনাস্থলে পাওয়া ছুরি ও তার কেনা ছুরির ব্র্যান্ড একই দেখে এমন সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা,,,
ডিবির উপ-কমিশনার জানান, বারীর মোবাইল ফোনে কার্যক্রম, পারিবারিক ও পেশাগত জীবন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে তার কোনো সন্দেহভাজন শত্রু নেই। তাছাড়া ঘটনাস্থলে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তির উপস্থিতির আলামতও পায়নি পুলিশ,,,
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদ সকালে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ডিবি ছাড়াও র্যাব, পিবিআই এবং থানা পুলিশের তদন্তেও বারীকে খুনের কোনো প্রমাণ মেলেনি। তবে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি উল্লেখ করে এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ তদন্তে নতুন কোনো তথ্যও পাওয়া যেতে পারে!
প্রসঙ্গত, ডিবিসি নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রযোজনা নির্বাহী আব্দুল বারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বারীর ভাই মো. আব্দুল আলীমের করা ওই মামলাটি তদন্ত করে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ।