পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিলেটে আবারও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুরসহ সিলেট নগরীর অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
জানা গেছে, শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে নেমেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে স্থানীয় আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন তারা।
এর আগে সকালে এক বার্তায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, অসামরিক প্রশাসনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর, খাদিমপাড়া, টুকেরবাজার, জালালাবাদ, মোগলগাঁও, কান্দিগাঁও, হাটখোলা ইউনিয়নের বাসিন্দারা। বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন হাট-বাজার, মসজিদ, স্কুল-মাদ্রাসাসহ ভিটে-বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ক্ষেত ও বীজতলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরীর অনেক বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে আবাসিক হোটেলগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন। তবে চলাচলের জন্য কোনও যানবাহন মিলছে না। জরুরি প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না।
নগরীর বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাঘাট, বাড়িঘর সব ডুবে গেছে। পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি না। এখন পর্যন্ত কোনও উদ্ধারকারী পাইনি। ৯৯৯ নম্বরে সহায়তার জন্য ফোন দিয়েও পাইনি।’
তালতলার এলাকার গৃহিণী সানজিদা ইসলাম জানান, ‘সিলেটের অবস্থা ভয়াবহ। বিশুদ্ধ পানিসহ খাবারের সংকটে আছি। বাসার সব মালামাল পানিতে ডুবে আছে। পরিবারের সবাইকে রিয়ে খাটের ওপর বসে দিন কাটাচ্ছি।’
জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারের পর নিরাপদ স্থানে নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসতে বলা হচ্ছে। খাদ্য সংকট দূর করতে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।