বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেছেন, টাকা ফেরত আনার পরিবর্তে কীভাবে টাকা পাচার হলো— সে প্রশ্ন তোলা উচিত। সোমবার (১৩ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টার ইনে বাজেটোত্তর পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে সেলিম রায়হানের পাশাপাশি বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সানেমের গবেষণা পরিচালক সায়েমা হক।
সেলিম রায়হান বলেন, এ বছর বাজেটের পর পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা নিয়ে যত আলোচনা হচ্ছে, বাজেটের মূল কাঠামো নিয়ে তত হচ্ছে না। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ সব দিক দিয়েই অনৈতিক। সানেম এই নীতি সমর্থন করে না।
সানেম বাজেট পর্যালোচনা
অবশ্য আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটকে ব্যবসা-বান্ধব বলেও মন্তব্য করেন সেলিম রায়হান। তিনি উল্লেখ করেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট করে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ সুবিধা বড় ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু দুই বছরে করোনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত খুব বেশি সহায়তা পায়নি।
সায়েমা হক বলেন, মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার ছিল। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে তা কমেছে। এটি সরকারের ঘোষিত নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে জিডিপির ২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হবে। কিন্তু এ বছর পেনশন, বৃত্তি ও সুদ বাদে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে প্রকৃত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জিডিপির এক শতাংশের মতো। যা গত বছরের চেয়েও কম।
সানেমের বাজেট পর্যালোচনায় বলা হয়, মাথাপিছু সামাজিক ভাতা বাড়ানোর দরকার ছিল। ‘আমাদের প্রস্তাব ছিল, ওপেন মার্কেট সেল বা ওএমএস বরাদ্দ বাড়ানোর। কিন্তু বাস্তবে এ বরাদ্দ কমানো হয়েছে।’
সায়েমা হক বলেন, ২০১৬ সালের পর সরকারি কোনও পরিসংখ্যান নেই। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশের মোট সম্পদের ৩৮ শতাংশ দেশের ১০ শতাংশ শীর্ষ ধনীর হাতে। কোভিডকালে এ বৈষম্য আরও বেড়েছে। বৈষম্য কমাতে তিনি কর কাঠামো সংস্কারের পরামর্শ দেন।
সেলিম রায়হান বলেন, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার জরিপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এসব জরিপ নিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ নিতে পারে। সেখানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের জরিপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য প্রস্তুত।