নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাবার কোলে থাকা অবস্থায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত শিশু তাসপিয়া হত্যার প্রধান আসামি রিমনসহ পাঁচজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে সুবর্ণচরের চরক্লার্ক থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন, মামলার প্রধান আসামি হাজীপুরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের মোমিন উল্যাহর ছেলে রিমন, ৩নং আসামি একই গ্রামের তসলিম উদ্দিনের ছেলে মহিন, ৪নং আসামি শাহাব উল্যাহর ছেলে আকবর হোসেন, ৫নং আসামি আবদুর রশিদ কেতনার ছেলে সুজন ও ১০নং আসামি লতিফপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম মারির ছেলে নাঈম।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল-গুলিসহ বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব-১১ (সিপিসি-৩, কোম্পানি কমান্ডার) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শামীম হোসেন রাতে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের অবস্থানের খবর পেয়ে র্যাবের একটি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চরক্লার্কের নির্জন একটি খামার বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় র্যাবের উপস্থিত টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে, পক্ষান্তরে র্যাবও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। অবশেষে র্যাবের কৌশলের কাছে সন্ত্রাসীরা হার মানে।
পরে ঘটনাস্থল থেকে প্রধান আসামি স্যুটার রিমনসহ পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দেশি-বিদেশি পিস্তলসহ বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বুধবার (২০ এপ্রিল) সকালে বেগমগঞ্জ র্যাব-১১ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বুধবার (১৩ এপ্রিল) থেকে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান ও বিভিস্থানে চেকপোস্টের ফলে আসামিরা জেলার বাইরে যেতে পারেনি। তবে তারা একাধিকবার স্থান পরিবর্তন করায় গ্রেফতারে ছয়দিন সময় লাগলো।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি জানান, শিশু তাসপিয়া হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) মামলা দায়েরের পর তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত চারজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় বেগমগঞ্জের পূর্ব হাজীপুর গ্রামের মালেকার বাপের দোকানের সামনে জমির মাটি কাটা নিয়ে সেখানে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। শিশুসন্তান তাসপিয়াকে কোলে নিয়ে ঘটনাস্থলে ছিলেন প্রবাসী জাহের। গুলিতে তিনিসহ তার শিশুকন্যা তাসপিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে নোয়াখালী থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টায় শিশু তাসপিয়া কুমিল্লায় মারা যায়।
শিশু তাসপিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় তার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলা নম্বর ২৪। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।