1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লায় ডাকাতির নাটক সাজিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতিজাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা ক‌রে চাচা রাজধানীর কাকরাইলে সভা সমা‌বেশ নি‌ষিদ্ধ নারায়ণগঞ্জ মহানগর ১৪ নং ওয়ার্ড কৃষক দলের কমিটি অনুমোদন শোক সংবাদ: নারায়ণগ‌ঞ্জের রিটন দে আর নেই সারজিস ও হাসনাতকে রংপু‌রে অবাঞ্ছিত ঘোষণা জাতীয় পার্টির নারায়নগঞ্জের কালিরবাজার এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ড সাবেক ছাত্র দলের সভাপতি জাকির খানের মুক্তির দাবীতে নগরীতে বিক্ষোভ ও মিছিল। দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না : সাকি।বিস্তারিত ভিডিও তে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসছেন প্রধান উপদেষ্টা সোনাইমুড়ী উপজেলায় বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদ

ক্যাম্প ছেড়ে পালাচ্ছেন রোহিঙ্গারা- দে‌শের জন্য সমস্যা

নাগ‌রিক খবর অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৫৫ বার পঠিত

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় শিবিরগুলো থেকে পালিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করছেন রোহিঙ্গারা। গত দুই সপ্তাহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ক্যাম্প ছেড়ে পালাতে যাওয়া ৭৮৭ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ।

এর মধ্যে গত বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে ক্যাম্প ছেড়ে পালানোর সময় ১২৮ জনকে আটক করা হয়েছে। ওইদিন রাতে টেকনাফের সাত ক্যাম্পে ১৬ এপিবিএন তল্লাশি চালিয়ে ১৫২ জনকে আটক করে। তার আগের দিন মঙ্গলবার উখিয়া স্টেশন থেকে ৮০ জনকে আটক করে পুলিশ। সোমবার উখিয়া থানা পুলিশের হাতে আটক হন ১৮৪ রোহিঙ্গা। আর একইদিন টেকনাফ থানা পুলিশের অভিযানে আটক হন ৫০ জন। এর আগে গত ২১ মার্চ সোনাদিয়া থেকে ১৪৫ জন এবং ২৫ মার্চ টেকনাফের বাহারছড়া উপকূল থেকে নারী-শিশুসহ ৪৮ রোহিঙ্গা আটক হন।

সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে প্রতিদিন শতশত রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বের হলেও সন্ধ্যায় অনেকে আর ফিরে আসছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের কেউ কেউ মালয়েশিয়া পাড়ি দিতে দালালের আস্তানায় যাচ্ছেন। বাকি বিশাল একটি অংশ জেলাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে খুন, অপহরণ, মাদকসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন অনেক রোহিঙ্গা। আবার রোহিঙ্গাদের আগ্রহে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে মানবপাচারকারি চক্র। মঙ্গলবার উখিয়া থেকে মানবপাচার চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাই রোহিঙ্গাদের অবাধে ক্যাম্প থেকে বের হওয়াকে ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোরশেদ বলেন, বুধবার সকালে ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে কাজের সন্ধানে যাওয়ার প্রাক্কালে ১২৮ জনকে আটক করা হয় । এর আগে মঙ্গলবার উখিয়া স্টেশনের আশপাশ থেকে আটক করা হয় ৮০ জনকে। আর সোমবার আটক করা হয় ১৮৪ জনকে। একইদিন টেকনাফ থানা পুলিশের অভিযানে আটক হন আরও ৫০ জন। আটকদের কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সূত্র মতে, গত ২১ মার্চ মহেশখালীর সোনাদিয়া থেকে উদ্ধার হন ১৪৫ রোহিঙ্গা। পাচারকারি চক্র মালয়েশিয়া বলে তাদের সোনাদিয়ার চরে নামিয়ে লাপাত্তা হয়। এছাড়া ২৫ মার্চ টেকনাফের বাহারছড়া উপকূলে ট্রলারের কুটরি থেকে নারী-শিশুসহ ৪৮ জনকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

টেকনাফ ক্যাম্পে দায়িত্বরত ১৬ এপিবিএন সূত্র জানায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ১৬ এপিবিএনের দায়িত্বাধীন সাতটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রবেশ ও বাহির পথে নিয়মিত তল্লাশি চালানো হয়। এসময় ক্যাম্পে প্রবেশকালে ১৫২ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এসব রোহিঙ্গারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে অবৈধভাবে ক্যাম্পের তারকাঁটার বেষ্টনীর কাটা অংশ দিয়ে বাইরে গিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। আটক রোহিঙ্গাদের পুনরায় অবৈধভাবে ক্যাম্পের বাইরে না যাওয়ার শর্তে সংশ্লিষ্ট মাঝির জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে এখন বেকায়দায় স্থানীয়রা। ক্যাম্পকেন্দ্রিক সেনা কার্যক্রম ও তল্লাশি চৌকি ছিল, তা তুলে নেওয়া উচিত হয়নি। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কমিটিতে রাখা হয় না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়দের স্বার্থ রক্ষায় কথা বলার মানুষ নেই। রহস্যময় কারণে ক্যাম্প প্রশাসন ও তদারককারী এনজিওগুলোর সঙ্গে বোঝাপড়ায় রোহিঙ্গারা অবাধ বিচরণের সুযোগ পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এটা ক্ষতির কারণ হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্যাম্প ছেড়ে পালানোর পর এসব রোহিঙ্গারা টেকনাফ-উখিয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অল্পমূল্যে কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। এতে করে স্থানীয়রা কর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ছেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, তথ্য এসেছে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পের বাইরে আসা রোহিঙ্গারা সস্তায় শ্রম বিক্রি করে। তারা বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও চালকের সহকারী বা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। কেউ কেউ বাসাবাড়িতে গিয়েও কাজ করার তথ্য আছে। এতে স্থানীয় শ্রমজীবীরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি এসব রোহিঙ্গাদের সঙ্গে স্থানীয় অপরাধী চক্রের যোগাযোগ গড়ে ওঠায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে আসার প্রবণতা রোধে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আটকের পর তাদের ফের নিজ নিজ শিবিরে পাঠানোর হচ্ছে।

ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের পালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) শিহাব কায়সার খান বলেন, আশ্রয় শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের বসবাস। সে হিসেবে আমাদের সদস্য সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। এপিবিএন ১৪, ১৬ এবং ৮ তিনটি ব্যাটালিয়ন মিলে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা মাত্র ২ হাজারের মতো। ক্যাম্পের বিশাল এরিয়ায় কাঁটাতারের বেরা দেওয়া হয়েছে। কাঁটাতারের সব জায়গায় গাড়ি বা পায়ে যোগাযোগও দুরূহ। কিন্তু সেসব এলাকায় রোহিঙ্গারা সহজে চলে গিয়ে কাঁটাতারের নিচে চলাচলের পথ তৈরি করে বাইরে চলে যায়। খবর পেলে আমরা ক্যাম্প ইনচার্জকে (সিআইসি) জানিয়ে তা বন্ধ করার ব্যবস্থা করি।

তিনি আরও বলেন, আবার বেশকিছু এলাকায় রোহিঙ্গাদের খাবার সরবরাহ করা হয় ক্যাম্পের বাইরে। তখন তাদের সেখানে যেতে দেওয়া লাগে। এখান থেকেও অনেকে কাজের সন্ধানে চলে যায় বলে খবর পাই। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি, রোহিঙ্গারা যেন ক্যাম্পের বাইরে যেতে না পারে।

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে ইচ্ছেমতো বের হয় আবার ঢোকে। তারা এরইমধ্যে উখিয়ার প্রায় শ্রমবাজার দখল করে নিয়েছে। কিন্তু সবকিছু দেখার পরও প্রশাসন নীরব। এতে করে স্থানীয়রা অসহায় হয়ে পড়ে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন স্থানীয়দের চলাচলে বাধা দিলেও রোহিঙ্গাদের চলাফেরায় তেমন একটা বাধা দিতে দেখা যায় না। এ কারণে রোহিঙ্গারা দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে বলে দাবি করেন এ জনপ্রতিনিধি।

এবিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সামছুদ দৌজা নয়ন বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও কোনো কোনো রোহিঙ্গা আরও সচ্ছল জীবনের আশায় বা অপরাধে জড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ক্যাম্পের বাইরে যাচ্ছে। তবে, বিশেষ অনুমতি ছাড়া রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচল বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সুত্র: জা‌গো নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com