চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর শফিউদ্দিন হত্যার দীর্ঘ ১৮ বছর পর কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত শিপন হাওলাদার ও নাইমুল ইসলাম ঈমনের দণ্ডাদেশ কার্যকর হতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রাত ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর হবে।
সোমবার (৭ মার্চ) রাতে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত শিপন হাওলাদার (বন্দি নং ৫০৭৯/এ) চট্টগ্রামে খুলশীর দক্ষিণ আমবাগানের মৃত ইউনুছ হাওলাদারের ছেলে। অপরজন নাইমুল ইসলাম ঈমন (বন্দি নং ৫৭৩৮/এ) চট্টগ্রামে লালখান বাজার ডেবারপাড় এলাকার ঈদুন মিয়া সরকারের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী ছিলেন শফিউদ্দিন। তিনি রেলওয়ে আমবাগান এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মদ, জুয়া ও রেলওয়ের সম্পদ দখলের প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন। এ কারণে রেলওয়ের জায়গা থেকে চার দফায় অবৈধ বস্তি ও কলোনি উচ্ছেদ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এর জের ধরে সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০০৩ সালের ১৪ জুন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার সরকারি বাসায় ঢুকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করে বোমা ফাটিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন হত্যাকারীরা।
এ ঘটনায় নিহত শফিউদ্দিনের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এ হত্যা মামলায় দুই ঘাতক শিপন ও ঈমনকে ফাঁসি, সাত আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চারজনকে খালাস দেন।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আসাদুর রহমান বলেন, সাজার বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত রিভিউ খারিজ করে দেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হলে সেটিও খারিজ হয়ে যায়।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ বলেন, উচ্চ আদালতে ফাঁসির সাজা বহাল রাখা এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে কারা বিধি অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হয়। সেই অনুসারে অন্যান্য আরও কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে।জানি