কুমিল্লা দেবীদ্বার বরকামতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনুর রশীদকে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করে হাতের আঙুল কেটে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার রাত আনুমানিক একটার সময় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বার-বুড়িচং উপজেলার সীমানা সংযোগস্থল কংশনগর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হারুনুর রশিদ দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়ন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্কাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলামের কাছে প্রায় তিন হাজার ভোটে পরাজিত হন। ওই ইউপিতে নৌকার বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল ইসলাম দেবীদ্বার উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের বাবা।
সন্ত্রাসী হামলার শিকার হারুনুর রশিদের স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের ধরে সালাউদ্দিন, আলমগীর, বাচন, পলাশসহ একদল সন্ত্রাসী মনির হোসেন নামে তার এক সমর্থককে মারধর করে। এ ঘটনায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে মামলা দায়ের করতে রাতে থানায় যান হারুনুর রশিদ।
থানায় মামলা করতে যাওয়ার জের ধরে বিজয়ী প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। হারুন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে রাত ১টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার পথে দেবিদ্বার-বুড়িচং সীমান্তবর্তী কংশনগর এলাকায় পৌঁছামাত্র সন্ত্রাসীরা প্রাইভেটকার দিয়ে তাকে বহন করা সিএনজিকে ব্যারিকেড দিয়ে দাড় করানো হয়। এ সময় সিএনজিতে থাকা ইউপি সদস্য হাশেম ও চালক দৌড়ে পালিয়ে যেতে পারলেও হারুন আটকে যায় । একপর্যায়ে প্রাইভেটকার দিয়ে আসা সন্ত্রাসীরা হারুনকে সিএনজি থেকে নামিয়ে তার হাত-পা বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করে যাওয়ার সময় হারুনের ডান হাতের একটি আঙুল কেটে নিয়ে যায়। হারুনের শো: চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় কুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করে।।
চিকিৎসকরা জানান, হারুনুর রশিদের শরীর থেকে বিপুল পরিমাণ রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার ডান হাতের একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। পুরো শরীরে এবং মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে কুমেক হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
হামলার সময় তার সঙ্গে থাকা সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হাশেম বলেন, থানা থেকে বের হওয়ার পর পরই একটি মোটরসাইকেল আমাদের অটোরিকশাকে নজরদারি করছিল। পরে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের কংশনগর হয়ে ফুলতলী এলাকায় প্রবেশদ্বারে কয়েকটি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকার আমাদের সিএনজিকে ঘিরে ফেলে। এ সময় সিএনজি থেকে আমি দৌড়ে পালিয়ে যেতে পারলেও হারুনুর রশীদকে ধরে ফেলে সন্ত্রাসীরা। হামলায় প্রায় ৮/১০ জড়িত থাকলেও আমি মাসুদ, সালাউদ্দিন, আলমগীর, বাচন, পলাশ এবং রুবেলকে চিনতে পেরেছি। আর বাকিরা মুখোশ পরিহিত থাকায় চিনতে পারেন বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
ঘটনার বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, হামলার শিকার হারুনুর রশিদ আমার থানাধীন হলেও ঘটনাটি ঘটেছে বুড়িচং উপজেলার কংশনগর এলাকায়। আহতকে উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি করেছে বুড়িচং থানা পুলিশ। তিনি নাগরিক খবরকে বলেন, হামলার বিষয়ে বুড়িচং থানার ওসি এবং দেবপুর ফাঁড়ির ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব।
হামলার ঘটনা চারদিন অতিবাহিত হলেও থানায় এখনও মামলা হয়নি বলে নিশ্চিত করেন একটি সুত্র।