মাদকাসক্তি থেকে যুবসমাজকে দূরে রাখতে শুধু সিগারেটের মূলবৃদ্ধি সমাধান নয় বলে মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
তার মতে, শুধু দাম বাড়িয়ে তামাকজাত পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। মূল্যবৃদ্ধি করে যুব সমাজকে ফেনসিডিল ও হেরোইনের মতো মরণঘাতী নেশায় ঠেলে দেওয়া ঠিক হবে না বলেও মনে করেন তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, যখন গাঁজা সুলভ ছিল, তখন হেরোইনসহ অন্যান্য মারাত্মক ক্ষতিকর নেশা এবং মানুষ খুনের মতো অপরাধ কেমন ছিল? বর্তমানে সে পরিস্থিতি কেমন দাঁড়িয়েছে?- তা স্টাডি করা দরকার।
তিনি বলেন, আমি গাঁজার পক্ষে নই। কিন্তু গাঁজা দিয়ে হেরোইন, ইয়াবা ও ফেনসিডিল ঠেকানো গেলে আমি গাঁজার পক্ষে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (এটিএমএ-আত্মা) প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরামূল্য ১৫০ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছে ‘আত্মা’। এতে ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার দাবিও জানান তারা। এছাড়া সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে তামাকপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি চেয়েছে সংগঠনটি।
‘আত্মা’র দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, তামাকের দাম বাড়াতে বললে তামাক কোম্পানিগুলো খুশি হয়, আমরা খুশি হই। কিন্তু দাম বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ করা যায়- আপনাদের (তামাকবিরোধী জোট) এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দাম বাড়িয়ে ফেনসিডিল ও হেরোইনের দিকে ঠেলে দিতে চাই না।
সিগারেটের দাম বাড়লে নিম্নবিত্ত পরিবারে খরচ বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিগারেটের পেছনে বেশি খরচের কারণে সেসব পরিবারের শিশুরা পর্যাপ্ত প্রোটিন থেকে বঞ্চিত হবে। সিগারেটকে নাগালের বাইরে রেখে অন্য নেশার দিকে তরুণসমাজ ধাবিত হোক সেটা আমি চাই না। জনস্বাস্থ্য বিবেচনা করেই সিগারেটের বিষয়ে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে।
এসময় তিনি দাম বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণের কারণে অন্যান্য ক্ষতিকর নেশা আরও বাড়ছে কিনা, সে সম্পর্কে জানার অনুরোধ করেন।
আলোচনায় ‘আত্মা’র পক্ষে প্রস্তাব তুলে ধরেন সদস্য মনির হোসেন লিটন এবং সহ-আহ্বায়ক নাদিরা কিরণ। এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার তামাক খাত থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করছে, স্বাস্থ্য ক্ষতি তার চেয়েও বেশি।