আগামী ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হবে আইপিএল-এর মেগা নিলাম (IPL Mega Auction 2022) অনুষ্ঠান। হাতে আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরেই ১৫তম ‘ক্রোড়পতি লিগ’-এ খেলোয়াড় কেনাবেচার প্রক্রিয়া। মঙ্গলবার বিসিসিআই (BCCI) জানিয়ে দিল যে, এবার নিলামে উঠছেন ৫৯০ জন ক্রিকেটার। যাঁদের মধ্যে ২২৮ জন ‘ক্যাপড’ (দেশের হয়ে খেলেছেন) ও ৩৫৫ জন ‘আনক্যাপড’ (দেশের হয়ে খেলেননি)। ৭ জন ক্রিকেটার থাকছেন অ্যাসোসিয়েট দেশ থেকেও। এদের মধ্যে ৫ বিদেশি ক্রিকেটার নিলাম যুদ্ধে ঝড় তুলে দিতে পারেন।
ডেভিড ওয়ার্নার: আইপিএলের সবচেয়ে সফল বিদেশি বলতে ওয়ার্নারের নামটাই চলে আসে। ১৪৯ ম্যাচে যাঁর ঝুলিতে আছে ৫৪৪৯ রান। গতবছর ওয়ার্নারের আইপিএল পরিণতি হয়েছিল অত্যন্ত করুণ। দু’ম্যাচে রান (০ ও ২) না পাওয়ায় ওয়ার্নারের আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (Sunrisers Hyderabad) তাঁকে ব্রাত্যের তালিকায় ফেলে বসিয়ে দিয়েছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। এমনকী ওয়ার্নার মাঠেও আসেননি বেশ কয়েক ম্যাচে। হোটেলে বসেই খেলা দেখেছেন দলের। চলতি বছর আইপিএলে ৮ ম্যাচ খেলে মাত্র ১৯৫ রান করেন ওয়ার্নার। অজি ওপেনারের বায়োডেটার সঙ্গে যা একেবারে বেমানান। কারণ আইপিএল ইতিহাস বলছে তাঁর মাথায় একবার নয়, তিনবার উঠেছে কমলা টুপি। গতবছর আইপিএলের অধিনায়কত্ব খোয়ান কেন উইলিয়ামসনের কাছে। ওয়ার্নার কার্যত জানিয়েই দেন যে, তাঁর সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজির সম্পর্ক শেষ! যে ওয়ার্নারের কাছে এই মরুদেশ হয়ে গিয়েছিল বধ্যভূমি। যাঁকে টিম ভেবে নিয়েছিল অচল সিকি, সেই ওয়ার্নারই সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে বানিয়ে ফেলেছিলেন নিজের পুণ্যভূমি। টি-২০ বিশ্বকাপে বুঝিয়ে দেন যে, তাঁর ভিতরের আগুনটা এখনও জ্বলছে। অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবার কুড়ি ওভারের বিশ্বযুদ্ধ জেতানোর অন্যতম যোদ্ধা ছিলেন অজি ওপেনার। ওয়ার্নারকেই টুর্নামেন্টের সেরা প্লেয়ার (Player of the Tournament) হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। টি-২০ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান শিকারি হয়েছেন ওয়ার্নার। সাত ম্যাচে ২৮৯ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। মেগা নিলামে তাঁকে নেওয়ার জন্য ঝাঁপাবে বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
জনি বেয়ারস্টো: ইংল্যান্ড মহাতারকা হায়দরবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে বিগত কয়েক মরশুমে দারুণ পারফর্ম করেছেন। টপ অর্ডারে তিনি আগুনে ব্যাটিং করেছেন। বেয়ারস্টোর আইপিএলে স্ট্রাইক রেট ১৪২.১৯। যা আইপিএলের অধিকাংশ ওপেনারের থেকেই বেশি। কেকেআরের মতো দল গৌতম গম্ভীর ও রবিন উথাপ্পার মতো একজন ওপেনারের অভাব বোধ করে। সেখানে বেয়ারস্টোকে নিয়ে যে, তারা নিলামে ভাববে তা এখনই বলে দেওয়া যায়। বেয়ারস্টোর উইকেটকিপিংও করেন চমৎকার।
জেসন রয়: বেয়ারস্টোর ওপেনিং পার্টনার জেসন রয় বিধ্বংসী ব্য়াটার। যেদিন তিনি ফর্মে থাকেন, একা হাতে প্রতিপক্ষের বোলিং লাইন-আপ গুঁড়িয়ে দিতে পারেন। সাদা বলের ক্রিকেটে যা তিনি প্রায়ই করে থাকেন। পাঞ্জাব কিংস বা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মতো টিমের কাছে রয়ের সার্ভিস দুরন্ত কার্যকরী হতে পারে।
ফাফ দু প্লেসিস: এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, চেন্নাই সুপার কিংস ফাফ দু প্লেসিসকে ধরে রাখতে পারেনি। শেষ কয়েক মৌসুমে এমএস ধোনির দলের ব্যাটিংয়ের অন্যতম পুরোধা ছিলেন তিনি। টপ অর্ডারের অন্যতম স্তম্ভই নন, ফাফ একজন অসাধারণ ফিল্ডারও। প্রাক্তন প্রোটিয়া ক্যাপ্টেনকে নেওয়ার জন্য চেন্নাই যে ফের একবার ঝাঁপাবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও যে ফাফকে নিতে চাইবে, তাও বলে দেওয়াই যায়।
কুইন্টন ডি কক: দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটকিপার-ব্যাটার কুইন্টন ডি কক এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। ঝকঝকে ক্রিকেট খেলেন। দুরন্ত বল স্ট্রাইক করার ক্ষমতা রাখেন ডি কক। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের প্রাক্তন ওপেনার লাল বলের ক্রিকেটকে আলবিদা বলেছেন সদ্য। তাঁর পুরো ফোকাস সাদা বলের ক্রিকেটেই। ভারতের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে ডি কক ছিলেন ভাল ছন্দে। আইপিএল নিলামে তিনিও নজর কাড়বেন।