কুমিল্লা মহানগরীর নুরপুরে চাঞ্জল্যকর সারোয়ার রাফি হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটন করেছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। পরকীয়া প্রেমিকা গুলশান আরার হাতে খুন হয় নুরপুরের বিকাশ ব্যবসায়ি সারোয়ার রাফি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহান সরকার এ কথা জানান।
গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপুর চৌমুহনী এলাকায় নিজ বাসা থেকে গোলাম রাফি সরওয়ারের (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহত রাফির মা সৈয়দা আক্তার।
রাফি হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবুল খায়ের বিভিন্ন তথ্য ও বিশেষ সুত্র ধরে দ্রুত খুনের রহস্য উৎঘাটন করতে রাফির পরকীয়া প্রেমিকা গুলশান আনা নামের এক প্রবাসীর স্ত্রীকে গ্রেফতার করে।
গ্রেপ্তার গুলশান আরা প্রকাশ রোকসানার স্বীকারোক্তির বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহান সরকার বলেন, পরকীয়া সম্পর্কের জেরে এই নারী ‘পুতা’ [শিলনোড়া] দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে রাফিকে। এদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে মঙ্গলবার বিকালে আদালতে জবানবন্দি দেয় গুলশান আরা।
নিহত গোলাম রাফি সরওয়ার শহরের নুরপুর এলাকার মৃত আনোয়ার হেসেনের ছেলে। তিনি ওই এলাকায় মোবাইল ব্যাংকিং ও মোবাইলফোনের রিচার্জের ব্যবসা করতেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহান সরকার আরও বলেন, হত্যার ঘটনায় নিহতের মা সৈয়দা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক নারীকে (৪০) গ্রেপ্তার করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা ও সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী এই নারী ভাড়া বাড়িতে থাকেন কুমিল্লা নগরীর নুরপুর উত্তর পাড়ায়।
গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন বলে সোহান সরকার জানান।
তিনি বলেন স্বীকারোক্তিতে পরকীয়া প্রেমিকা গুলসান আরার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী। নিহত রাফি সারোয়ারের সঙ্গে তার দুই বছর ধরে ‘পরকীয়া প্রেমের’ সম্পর্ক ছিল। গত শনিবার রাফির মা তার বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাফি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই নারীকে বাসায় আসতে বলেন।
“সেখানে রাফি ও গুলশান আরার মধ্যে কথাকাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি রাফিকে বাসায় থাকা পুতা দিয়ে কপালে, মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। এতে রাফির মৃত্যু হয়। হত্যার পর রাফির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান তিনি।