চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে চেতনানাশক খাইয়ে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মোহাম্মদ আলী (৬২) নামে এক কবিরাজকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) উপজেলার বাথুয়া এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। মোহাম্মদ আলী ওই এলাকার মৃত সুলতান আহমদের ছেলে।
র্যাব জানায়, মালয়েশিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তির সঙ্গে এক নারীর ১৮ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক কন্যাসন্তান রয়েছে। গত ছয় বছর ধরে স্বামী মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। এদিকে এক বছর আগে কন্যাসন্তানের পড়ালেখার সুবিধার্থে স্ত্রীকে তার স্বামী চট্টগ্রাম শহরে ভাড়া বাসায় থাকতে বলেন। স্বামীর কথামতো ওই গৃহবধূ নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। তবে ওই বাসায় ওঠার পর থেকে গৃহবধূর সঙ্গে আচমকা তার স্বামী যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
এ নিয়ে হঠাৎ চিন্তার ভাঁজ পড়ে গৃহবধূর কপালে। এক প্রতিবেশীর পরামর্শে দ্বারস্থ হন মোহাম্মদ আলী নামে হাটহাজারী এলাকার এক কবিরাজের। শুরুতে কবিরাজ গৃহবধূর বাসায় গিয়ে তাবিজ ও পানি পড়া দেন। বিনিময়ে গৃহবধূর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেন। এতে কাজ না হলে গৃহবধূকে কবিরাজের বাসায় যেতে বলেন। তার বাসা থেকে গৃহবধূকে আরও দুই দফা তাবিজ ও পানি পড়া দেন। প্রতিবারই বিনিময়ে গৃহবধূর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নেন কবিরাজ।
এসবে কোনো কাজ না হওয়ায় সবশেষ ভুক্তভোগী গৃহবধূ গত ২২ জানুয়ারি পুনরায় কবিরাজের বাসায় যান। কিন্তু এবার কবিরাজ গৃহবধূকে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন এবং এতে করে স্বামীর সঙ্গে গৃহবধূর সম্পর্ক ভালো হয়ে যাবে বলে জানান। কিন্তু কবিরাজের এই প্রস্তাবে রাজি হননি গৃহবধূ। এরপর কবিরাজ গৃহবধূকে এক গ্লাস পানি পড়া খেতে বলেন। ওই পানির সঙ্গে কবিরাজ কৌশলে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেন।
পানি খাওয়ার পর অচেতন হয়ে পড়েন গৃহবধূ। এরপর কবিরাজ অচেতন গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর গৃহবধূ বিষয়টি টের পান। এ ঘটনার পর কান্নাকাটি করলে গৃহবধূকে একটি রিকশায় তুলে দিয়ে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন কবিরাজ।
চট্টগ্রাম র্যাবের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ঘটনার দুদিন (২৪ জানুয়ারি) পর ভুক্তভোগী গৃহবধূ কবিরাজের বাড়ি এলাকায় গিয়ে তাকে খোঁজাখুঁজির চেষ্টা করছিলেন। পরে ওই এলাকায় র্যাবের একটি টহল গাড়ি দেখতে পেয়ে তাদের বিষয়টি অবগত করেন গৃহবধূ। এরপর র্যাব অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত কবিরাজকে আটক করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত কবিরাজ গৃহবধূকে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।