1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের বিকল্প নেই ॥ রাষ্ট্রপতি

নাগরিক অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৪৯২ বার পঠিত

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, পারস্পরিক শান্তি ও সম্প্রীতি নিশ্চিত না করি- তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য পৃর্থিবীর রেখে যেতে পারব না। আর শান্তি মানুষের মৌলিক অধিকার। এটি শুধু দেশ বা আঞ্চলিক নয়- সারাবিশ্বে আজ শান্তি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

ঢাকায় দুই দিন ব্যাপি বিশ্ব শান্তি সন্মেলনের উদ্বোধনী ঘোষণাকালে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ ঐক্যের আহ্বান জানান। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ সন্মেলনে তিনি আরও বলেন, মানুষের ব্যক্তিগত শান্তিই বৈশ্বিক শান্তি নিশ্চিত করতে পারে। টেকসই উন্নয়ন ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তিও শান্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত।

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে উদ্বোধন পর্বে ভিডিও কনফারেন্সে বঙ্গভবন থেকে যুক্ত হন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি করোনা ভাইরাস মহামারি আমাদের ভেতরের দুর্বলতাগুলো দেখিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে বলেছেন-ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে সবাইকে এক হতে হবে। বর্তমানে বিশ্ব অসংখ্য চ্যালেঞ্জ ও সংঘাতের মুখোমুখি। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই এবং পারস্পরিক শান্তি ও সম্প্রীতি নিশ্চিত না করি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য সুরক্ষিত পৃথিবী রেখে যেতে পারবো না। যা ইতিমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কবলে পড়েছে। রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন-আমাদের অবশ্যই ধর্ম, বিশ্বাস, বর্ণ এবং জাতিগত বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।একটি সুষম বিশ্বব্যবস্থা সকলের জন্য অপরিহার্য। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না যে, আমরা সকলে ভাগাভাগি করে এমন একটি গ্রহে বাস করি যার দায়িত্বও আমরা ভাগ করে নিয়েছি।

মহামান্য আরও বলেন- বাংলাদেশ বিশ্বাস করে বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সর্বোত্তম পন্থা। আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য আমরা শাšিতপূর্ণ উপায়ে সংঘাতের সমাধান এবং বিশ্বব্যাপী শান্তির প্রচারের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।

বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার অর্জনের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন-ওটা ছিল বাংলাদেশের প্রথম কোনো আšতর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্তি। যার ফলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধুতে রূপাšতরিত হয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে জাতির পিতার ভাষণ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন-কীভাবে বৈশ্বিক বৈষম্য ও অবিচার আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য প্রকৃত হুমকি তা বঙ্গবন্ধু তুলে ধরেছিলেন।

সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই নীতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি- উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মুক্তিযুদ্ধের পর মানবাধিকার ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার অবদান তুলে ধরেন।

উদ্বোধনী অনুষ্টানে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ভারতের সাবেক মন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভু। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন মালয়েশিয়ার সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ হামিদ আলবার, বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক ও জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আনোয়ারুল করিম চৌধুরী, মিসরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আরব লীগের সাবেক মহাসচিব আমর মুসা। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের ধারণকৃত ভিডিওবার্তা অনুষ্ঠানে দেখানো হয়।

এর আগে একই দিন সকালে এ উপলক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিতে বিশ্বাসী। আমরা সারা বিশ্বে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ফরেন সার্ভিস একাডেমি চত্বরে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প উদ্বোধন করার সময় তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিতে বিশ্বাসী। সে কারণে তিনি জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতি ও মানুষের ক্ষমতায়ন বিষয়ক প্র¯তাব তুলেছেন। সেই প্র¯তাব পাশও হয়েছে। আমরা সারা বিশ্বে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

সকালের সেসনে বিশ্ব থেকে আগত অতিথিদে উপস্থিতিতে বিশেষ বক্তৃতা তুলে ধরেন আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। এরপর বিশ্বব্যাপি শান্তি প্রতিষ্টায় বক্তব্য রাখেন-আর্জেন্টিনার বিশিষ্ট কূটনীতিক মিস. আইরিনে ভিক্টোরিয়া মাসিমিনো, অষ্ট্রেলিয়ার সিডনি পিস ফাউন্ডেশানের চেয়ারম্যান আর্চিবল্ড, ওমানের ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ সাদ সাইয়িদ আল মোকাদ্দম, জাপানের ইউএন কমিটি অন রাইটস অব দ্য চ্ইাল্ড এন্ড ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস লইয়ার ড. মিকিকো ওটানি, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার, কানাডিয়ান পিস কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন মি. মিগুয়েল ফিগুইয়েরা, সাইপ্রাসের পিস কাউন্সিলের প্রধান ড. স্টেলিয়স, গ্রীসের ওয়ার্ল্ড পিস কাউন্সিল মি. ইরাক্লিস টিসাভডারিডিস, ইন্দোনেশিয়ার এশিয়া জাস্টিস এন্ড হিউম্যান রাইটসের পরিচালক গালুহ ওয়ানদিটা , ইরাকের পিস রিসার্চার ড. আহমেদ জেলালাদ্দিন মুসটিফা, জাপানের পিস কমিটির মি. টাডাকি কাওয়াটা, নেপালের ত্রিভূবন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মি. জিওয়ান প্রকাশ শর্মা,নেপাল সুপ্রিম কোর্টের উকিল মি. জ্ঞানেন্দ্র বাহাদুর শ্রেষ্ট, পাকিস্তানের পিস এক্টিভিস্ট পীরজাদা মোহাম্মদ আমিন, পাকিস্তানের বিশিষ্ট কলামিষ্ট ও সম্পাদক মি. জাভেদ আহমেদ কাজি, ফিলিস্তিনের ড.আকেল টুগজ, ও শ্রীলংকার শান্তি বিশেষজ্ঞ মি. শিরলে মাহিনদা কুশন ডি আলউয়িস।

মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন আয়োজনের জন্য স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে সভাপতি ও সায়মা ওয়াজেদকে সদস্য সচিব করে ৪৬ সদস্যের আয়োজক কমিটি গঠন করা হয়। গত মার্চ মাসে এই সম্মেলনের অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এই সম্মেলন ঢাকা শান্তি ঘোষণা শীর্ষক একটি সর্বসম্মত ঘোষণার মাধ্যমে শেষ হবে। আজ রবিবার সমাপনী পর্বে সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com