বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আত্মসাৎ ও অবৈধভাবে লেনদেনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল স্ক্যামার চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এর কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ জিয়াউল হক ও মোঃ সাজিদ হাসান সেতু ।
গত মঙ্গলবার (০৯ নভেম্বর, ২০২১) বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি টিম।
সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে একটি বিদেশি বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আত্মসাৎ ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া যায়। আর্থিক প্রতারণার শিকার বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিতে একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ব্যক্তিগত তথ্য প্রদানের পাশাপাশি ব্যাংক হিসাবের তথ্য প্রদান করতে হয়। প্রতিষ্ঠানটি একাউন্ট ভেরিফিকেশনের অংশ হিসেবে প্রতিটি নতুন রেজিস্ট্রেশনকৃত একাউন্টের বিপরীতে অনধিক ০১ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ উক্ত একাউন্টের সাথে সংযুক্ত ব্যাংক একাউন্টে সাময়িকভাবে প্রদান করে থাকে। ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এই অর্থ ২ হতে ৩ দিনের মধ্যেই উক্ত প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে রিটার্ন করে।
গ্রেফতারকৃতরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির এই একাউন্ট অথেন্টিকেশন প্রক্রিয়ার সুযোগ নিতো। তারা প্রথমে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশি-বিদেশি প্রতারক চক্রের কাছ থেকে Perfect Money, WebMoney, Payoneer একাউন্ট ইত্যাদি মাধ্যম ব্যবহার করে ভুয়া নাম ঠিকানা সম্বলিত Social Security Number ও বিদেশি ব্যাংকের বেনামে তৈরি করা একাউন্ট ক্রয় করতো। অনলাইন থেকে ক্রয় করা এই তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে তারা প্রতিটি ব্যাংক একাউন্টের বিপরীতে উক্ত বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির ৩০০/৪০০টি ভুয়া একাউন্ট তৈরি করতো। এভাবে ৩০০/৪০০টি একাউন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য অর্থ একসাথে নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্টে জমা হলে চক্রটি ঐ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ফেরত যাবার পূর্বেই অন্য একটি ব্যাংক একাউন্টে উক্ত অর্থ সরিয়ে নিতো। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য তারা মূলত GO2Bank, Chime Bank ইত্যাদি আন্তর্জাতিক মোবাইল ব্যাংকিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করত। এ প্রতারক চক্রটি এ পর্যন্ত অসংখ্য ভুয়া একাউন্ট তৈরি করে হাজার হাজার মার্কিন ডলার প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
নতুন ধরণের প্রতারণার এই প্রক্রিয়াটির নাম “New Account Fraud’’।
গ্রেফতারকৃতদের রমনা মডেল থানায় রুজুকৃত মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।