কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গী শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম ওরফে সিফাতের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত
আজ সোমবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (টেকনাফ-৩) এর বিচারক তামান্না ফারাহ এ আদেশ দেন।
রবিবার দুপুরে জামিন পান সিনহার দলে থাকা আরেক শিক্ষার্থী শিপ্রা রাণী দেবনাথ। সিফাত ও শিপ্রা স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী।সিনহার সঙ্গে শিপ্রা ও সিফাতসহ তিনজন কক্সবাজার যান ভ্রমণবিষয়ক ভিডিওচিত্র ধারণ করতে।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিষবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। সেই থেকে তিনি কক্সবাজার কারাগারে রয়েছেন।
গতকাল ১০ আগষ্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিফাতের জামিন আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে পুলিশের করা ৩টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) পরিবর্তন করে র্যাবের হাতে ন্যাস্ত করার আবেদনও মঞ্জুর করেন আদালত।
মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ৩টি মামলা হয়। ২টি মামলা হয় টেকনাফ থানায়। এই মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ২ মামলায় আসামি করা হয় সিফাতকে। আর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে।
সিনহার নিহতের ঘটনায় ৩ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ঘটনার তদন্তে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে।
বুধবার নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদি হয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ জুডিসিয়িাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান ও ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতেই টেকনাফ থানায় মামলাটি নথিভূক্ত হয়েছে। পরদিন বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ মামলার ৭ জন আসামী আদালতে আত্মসমর্পন করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রদান করেন।
এই মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে র্যাবকে। আদালতে র্যাব প্রত্যেক আসামীর বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক ৭দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।