কুমিল্লার দেবিদ্বারে সালমা বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূর শরীরে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় আশরা পুর্বপাড়া গ্রামের আলী আশ্রাফের বাড়ির উঠানে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সালমা বেগম উপজেলার বরকামতা ইউনিয়নের আশরা(পূর্ব পাড়া) গ্রামের আলী আশ্রাফের স্ত্রী ও একই উপজেলার ছোটনা গ্রামের আব্দুল বারেকের মেয়ে।সালমা দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,সালমা বেগম ও লিজা বেগম দুজনে সম্পর্কে জ্যা (দেবরের স্ত্রী)। সালমা বেগমের বিয়ে হয়েছে প্রায় ১৮ বছর পূর্বে।লিজা বেগম আলী আশ্রাফের আপন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী।বিয়ে হয়েছে প্রায় তিন বছর পূর্বে। বিয়ের পর থেকে প্রায় সময় দুই জ্যা বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে প্রায় সময় ঝগড়া করত।কয়েকবার লিজা বেগম সালমা বেগমকে মারধর করেছে বলেও জানায় সালমার দশম শ্রেনীতে পড়ুয়া ছেলে হোসেন।ঘটনার দিন বেলা ১১টায় বাড়ির উঠানে ডিমের খোসা ফেলাকে কেন্দ্র করে লিজা বেগম সালমা বেগমের সাথে ঝগড়া শুরু করে।
এ নিয়ে দুই জনের মধ্য বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। শ্বশুর রফিকুল ইসলাম দুজনকে ঝগড়া থামাতে ধমক দিয়ে গরুর খামারে চলে যান।সাথে সাথে সালমা বেগমের ছেলে হোসেন তার মাকে টেনে ঘরে নিয়ে যান।
কিছুক্ষণ পর সালমা বেগম বের হয়ে আসলে দুজনের মাঝে আবার ঝগড়ার সৃষ্টি হয়।ঝগড়ার কিছুক্ষনের মধ্যে লিজা বেগম গ্যাসের চুলায় থাকা গরম পানি সালমা বেগমের শরীরে ঢেলে দিলে তার শরীর ঝলসে যায়।
চিৎকার শুনে শ্বশুর রফিকুল ইসলাম দৌড়ে এসে সালমার ঝলসানো শরীর দেখে প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে।অবস্থা আশংখাজনক হওয়ায় চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।।
অভিযুক্ত লিজা বেগম সালমা বেগমের সৌদি প্রবাসী দেবর রাসেলের স্ত্রী ও বুড়িচং উপজেলার মোকাম গ্রামের আব্দুল গফুরের মেয়ে।
এ বিষয়ে তাদের শ্বশুর রফিকুল ইসলাম বলেন, দুজনেই আমার পুত্রবধূ।ছোট পুত্রবধূ ঝগড়ার এক পর্যায়ে বড় বউয়ের শরীলে উত্তপ্ত গরম পানি ঢেলে দেয়। বড় বউয়ের পুরো শরীল ঝলসে গেছে।এটা খুবই হৃদয় বিদারক ঘটনা।বড় বউয়ের শরীলের প্রায় ৬০-৬৫% জায়গা ঝলসে গেছে।আল্লাহ জানে বাঁচে নাকি মরে।
এ বিষয়ে আহত সালমার পিতা আব্দুল বারেক বলেন, সে আমার মেয়েকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিছে।বিনা কারনে আমার মেয়েকে উত্তপ্ত গরম পানি ঢেলে শরীল ঝলসে ফেলেছে।বাঁচা মরার শঙ্কা আছে।আমার মেয়ের স্বামী প্রবাসে থাকায় আমি বাদী হয়ে লিজা ও প্রতিবেশী ইব্রাহিমের স্ত্রী বিলকিস বেগমকে আসামী করে দেবিদ্বার থানায় মামলা করেছি। পুলিশ লিজাকে সাথে সাথে আটক করেছে।বিলকিস পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে সালমা বেগমের বড় ছেলে হোসাইন বলেন,আমার আম্মাকে বিনা কারনে সব সময় চাচী নির্যাতন করতো।ঘটনার দিন সামান্য ডিমের কুসুম ফেলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে চাচী।আম্মার অবস্থা আশঙ্কাজনক।আমার ছোট এক ভাই ও বোন রয়েছে।আব্বু বিদেশ।আমরা এখন পুরো অসহায় হয়ে পড়েছি।আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সালমার বাবা বারেক মিয়া বাদী হয়ে দুই জনকে আসামী করে মামলা করেছে। মামলার প্রধান আসামী লিজাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।