বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আরোপিত মাসিক সারচার্জ ৬ শতাংশের বদলে ১ শতাংশ নির্ধারণের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি)।
সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মফিজুর রহমান রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রতিমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে বলেন, বেবিচক তার বিভিন্ন বকেয়া পাওনার ওপর মাসিক ৬ শতাংশ অর্থাৎ বাৎসরিক ৭২ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করে মোট পাওনা আদায় করে।
চিঠিতে একটি অনলাইন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বলা হয়, বর্তমানে চালু ও বন্ধ হয়ে যাওয়া এয়ারলাইন্সগুলোর কাছে বেবিচকের পাওনা পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই মাত্রাতিরিক্ত সারচার্জ আরোপের কারণে অনেকে তাদের পাওনা পরিশোধ করতে পারছেন না এবং বিরাট দেনার চাপে দেউলিয়া হওয়ার অবস্থায় উপনীত হচ্ছে।
গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ওই চিঠিতে বলা হয়, বেবিচকের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে ৪ হাজার ৩১৫ কোটি (মূল পাওনা ৯২০ কোটি), জিএমজি এয়ারলাইন্সের কাছে ৩৬৮ কোটি (মূল পাওনা ৫৭ কোটি), ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কাছে ৩৫৫ কোটি (মূল পাওনা ৫৭ কোটি) এবং রিজেন্ট এয়ারের কাছে ২৮৩ কোটি (মূল পাওনা ১৩৬ কোটি) পাওনা রয়েছে। যেখানে মূল পাওনার চেয়ে সারচার্জসহ পাওনা অনেক বেশি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, কোনো এয়ারলাইন্স সময়মতো বিল পরিশোধ করতে না পারলে বকেয়া বিলের ওপর সারচার্জ দিতে হবে এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। তবে সেই সারচার্জের হার যৌক্তিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, অন্য যেকোনো দেশের সারচার্জের থেকে বাংলাদেশে এই হার বহুগুণ বেশি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতিকে আরও গতিময় করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সুদ হার অনধিক ৯ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। বেবিচকের আরোপিত মাসিক ৬ শতাংশ অর্থাৎ বাৎসরিক ৭২ শতাংশ সারচার্জ শুধু অতিরিক্ত নয় বরং পশ্চাৎপদ, অযৌক্তিক ও ব্যবসা-বান্ধব নীতির পরিপন্থী।
এওএবির চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে সম্মান জানিয়ে ‘মুজিববর্ষ’ পালন করছে। এ মহান নেতার হাত ধরে এদেশে প্রথম এভিয়েশন ব্যবসার সূত্রপাত হয়েছিল। সেই সঙ্গে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে এভিয়েশনসহ সব সেক্টরে গতিশীল উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। মুজিববর্ষে অতিরিক্ত সারচার্জ পুনঃমূল্যায়ন করে এভিয়েশন ব্যবসায় স্বস্তিদায়ক পরিবেশ তৈরি এবং বকেয়া পাওনা জর্জরিত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পাওনা পরিশোধ করার সুযোগ পাবে এমনটাই প্রত্যাশা।
চিঠিতে প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে তুলনা করে ও বর্তমান ব্যাংক হারকে বিবেচনায় রেখে ৬ শতাংশ সারচার্জ সংশোধন করে মাসিক ১ শতাংশ হারে নির্ধারণ করে একটি যৌক্তিক ও সন্তোষজনক সারচার্জ আরোপ করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।