ফলো-আপ:
কুমিল্লা সদর উপজেলার সুবর্নপুর গ্রামে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই প্রধান আসামী পুত্রবধূ শিউলিসহ তিন খুনীকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। নিহত দম্পতির বড় ছেলে দুবাই প্রবাসী দিদারের স্ত্রী শিউলি আক্তার তার খালাতো ভাই জহির ও তার সহযোগী তুহিনকে নিয়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটায়। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. আবদুর রহিম সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুত্রবধূসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো পুত্রবধূ নাজমুন নাহার শিউলি (২৫), তার খালাত ভাই জহিরুল ইসলাম সানি (১৯) ও তার বন্ধু মেহেদী হাসান তুহিন (১৮)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, পারিবারিক নানা কারণে শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে প্রায় সময় পুত্রবধুর ঝগড়া বিবাদ হত। এ কারনে শুশুর শাশুড়ির উপর ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে শিউলি। প্রবাসী স্বামী সৈয়দ আমান উল্লাহকে ফোনে পারিবারিক সমস্যা ও ঝগড়া বিবাদের বিষয়ে জানালেও ততটা গুরুত্ব দিত না স্বামী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের হত্যার পরিকল্পনা করেন শিউলি।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ি রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে খালাত ভাই জহির ও তার সহযোগি তুহিনকে বাড়িতে এনে লুকিয়ে রাখেন। রবিবার রাত ৮টায় এশার নামাজরত অবস্থায় প্রথমে শিউলির ওড়না দিয়ে শাশুড়ি সফুরা খাতুনের (৫৫) মুখ চেপে ধরে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে এ সময় শিউলি কম্বল দিয়ে সহযোগিদের সহায়তায় শাশুড়িকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।। এরপর রাত দশটার সময় বাজার থেকে শুশুর বিল্লাল হোসেন বাড়িতে প্রবেশ করার সাথে সাথে জহির ও তুহিন তাকে ঝাপড়িয়ে ধরে সোফায় ফেলে তাকেও শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে সহযোগি জহির ও তুহিন শিউলির হাত পা বেঁধে রেখে চলে যায় । কিছুক্ষন পরেই শিউলি ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন আসলে বলেন ঘরে ডাকাত আসছে , ডাকাতেরা তার শুশুর শাশুড়িকে মেরে ফেলছে।
পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএমের নির্দেশে ডিবি পুলিশ শিউলিকে আটক করে জিঙ্গাসাবাদ শুরু করে। একপর্যায়ে শ্বশুর শ্বাশুড়ীকে হত্যার ঘটনা শিকার করে সে। শিউলির স্বীকারক্তিতে ডিবির এসআই পরিমল চন্দ্র দাস পিপিএম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জহির ও তুহিনকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য গত রবিবার মধ্যরাতে কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী সুবর্ণপুর গ্রামে বৃদ্ধ দম্পতিকে নিজ ঘরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ সময় ভিকটিমের পুত্রবধু নাজমুন নাহার শিউলি অজ্ঞাত ডাকাতদল তার শুশুর শাশুড়িকে হত্যার ঘটনা প্রচার করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। ঘটনার বর্ণনা শুনে পুত্রবধু শিউলিকে সন্দেহ হলে পুলিশ জিঙ্গাসাবাদের জন্য তাকে আটক করে।