প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বলেছেন, তোমাদের থেকেই ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি হবে। তোমরা দেশকে ভবিষ্যতে কিভাবে পরিচালনা করবে, সে কাঠামো আমি তৈরি করে দিয়েছি। ২১০০ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা তৈরি করে দিয়েছি।মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা এই প্রজন্ম আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছো। এই দেশকে ভবিষ্যতে গড়ে তোলার জন্য নিজেদের তৈরি করতে হবে। তোমাদের ধন্যবাদ জানাই, করোনায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছো। লাশ দাফন-কাফন করেছো। কৃষকের ধান কেটে দিয়েছো, এটাই তো বড় কাজ। এভাবে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলো। আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে চলছি। তোমরাও সেই আদর্শ ধারণ করে চলবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধশক্তি ও ১৫ আগস্টের খুনিদের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তারা আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল, তাদের থেকে মদত পায়। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের পদে পদে শত্রু আছে। আমাদের চলার পথ মসৃণ না, কণ্টকাকীর্ণ। সে কথা মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধু নামটা মুছে ফেলা হয়েছিল। বিকৃত ইতিহাস প্রচার করা হতো। জয় বাংলা স্লোগানও নিষিদ্ধ ছিল। আজকে আর বঙ্গবন্ধুর নাম মোছা যাবে না। স্বাধীনতার ইতিহাস মোছা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, আমার দেখা নয়া চীন ও গোয়েন্দা ডায়েরি সাত খণ্ডে প্রকাশ করেছি। সেখান থেকেই বাংলাদেশের ইতিহাস এবং সত্য বেরিয়ে আসে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি প্রতিকূল হলেও সৎ পথে থাকলে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগুলে, সফলতা আসবেই। তবে সত্যের পথ সব সময় কঠিন থাকে। এই কঠিনকে সঙ্গে করে যারা এগিয়ে যেতে পারে, তারাই সাফল্য আনতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, মেধাবী ছাত্রদের অস্ত্র, মাদক ও অর্থ তুলে দিয়ে বিপথে নিয়ে গেছেন জিয়াউর রহমান। তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে হুমকি দিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করতে তার ছাত্রদলই যথেষ্ট। তিনিও ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, হাজার হাজার সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা, শত শত লোকদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এসব করেছেন জিয়াউর রহমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কখনো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালিয়েছেন, এরকম নজির নেই। কেউ দেখাতেও পারবে না। কর্নেল রশিদ ও ফারুক বিবিসিতে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সেখানে তারা স্বীকার করেছেন- জিয়াউর রহমান এই খুনিদের সঙ্গে ছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বদৌলতেই জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হয়েছিলেন। পাকিস্তান থাকলে তিনি কিন্তু মেজরই থেকে যেতেন।
মায়ের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার মা ছাত্রলীগ সংগঠনকে গড়ে তোলা, দিকনির্দেশনা দিতেন। আর্থিক সংকট দেখা দিলে নিজের হাতের গহনা বিক্রি করে টাকা জোগাড় করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সব সময় আমাদের পরিবারের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি ছিল। আমার মা এত সূক্ষ্মভাবে কাজগুলো করতেন, গোয়েন্দারা টেরই পাননি। অসামান্য স্মরণশক্তি ছিল মায়ের। বাবা যা নির্দেশনা দিতেন জেল থেকে, তিনি তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করতেন।
ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান।সুত্র:জানি।