রাজধানীর গুলশানে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার রহস্যজনক মৃত্যুর আলোচিত ঘটনায় পুলিশ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করবেন মামলার বাদী নুসরাত জাহান তানিয়া।
মুনিয়ার প্রেমিক ও মামলার প্রধান আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই ওই আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন নুসরাত। তার দাবি, আনভীরের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত করেনি। প্রভাবশালী হওয়ার কারণে মুনিয়ার ঘাতককে ছাড় দেয়া হয়েছে।
এদিকে দেশজুড়ে আলোচিত ওই মামলা থেকে বসুন্ধরা এমডিকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে এর সমালোচনা করে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিচ্ছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ভিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী মানবকণ্ঠকে জানান, মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় ১৯ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার ওসি মো. আবুল হাসান। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় আসামি বসুন্ধরার এমডি আনভীরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিসির এ দাবির পরপরই হতাশা প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মামলার বাদী মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। তিনি মানবকণ্ঠকে বলেন, আমরা মনে করছি না পুলিশ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত করেছে। টাকার দাপট খাটিয়ে মামলার তদন্তকে প্রভাবিত করেছে আমার বোনের ঘাতক আনভীর। ফলে মামলার পুনরায় তদন্তের জন্য আদালতে নারাজি আবেদন দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নুসরাত জাহান বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আনভীর আমার বোন মুনিয়াকে প্রায় দুই বছর ভোগ করেছে। মুনিয়ার মৃত্যুর পর তার অন্তঃসত্ত্বা থাকার বিষয়টিও ফরেনসিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। লাশ দেখেই বোঝা গিয়েছিল এটি একটি হত্যাকাণ্ড। মামলার পর আনভীরের বিরুদ্ধে নানা তথ্য প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। অথচ এখন আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে বলছে, আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এমন তদন্ত প্রতিবেদন অধিকাংশ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
গত দেড় মাসে তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলেও অভিযোগ করেন বাদী। ছোট বোন মুনিয়া ‘হত্যার’ নিরপেক্ষ তদন্ত ও আসামির কঠোর বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কন্যা নুসরাত।
গত ২৬ এপ্রিল রাতে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে ২১ বছর বয়সী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান তানিয়া।সুত্র:মানবকন্ঠ।