দিনে দিনে করোনার প্রকোপ বেড়েই চলেছে ।পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর হার,আক্রান্তের সংখ্যাও।
কিন্তু এতেও যেন কোন ভ্রুক্ষেপ নেই কারও ।বাইরে বেরোলেই গলায় মাস্ক ঝুলিয়ে কিংবা মাস্ক ছাড়া অকুতোভয় ঘুরে বেড়ানো মানুষের দেখা মিলছে পথে ঘাটে ।নিয়ম করে নাক ও মুখ ঢেকে
মাস্ক পরছেন না অধিকাংশ মানুষ ।কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে ,বাড়ছে সংক্রমণের ভয় এবং হার ।
তবে মাস্ক পরলেও কোন মাস্কটা সঠিক ,কোন মাস্ক পরা উচিত ,কিভাবে ব্যবহার করা উচিত?
মনে রাখতে হবে ভাইরাসের শরীরে প্রবেশ আটকানো হলো মাস্কের মূল লক্ষ্য ।কিন্তু কোন মাস্ক পরবে আমজনতা ?মাস্ক কী ধোয়া যায় ,কয়টা মাস্ক ব্যবহার করবে মানুষ ?কি ভাবে ?
এন ৯৫ মাস্ক সবচেয়ে কার্যকর ।তবে তার প্রয়োজন শুধুমাত্র চিকিৎসক এবং ফ্রন্টলাইনারদের ।
কারণ তাদের সরাসরি রোগীদের সংস্পর্শে আসতে হয় ।এই মাস্ক ব্যবহারের পরেও চিকিৎসক এবং ফ্রন্টলাইনার যোদ্ধারা সংক্রমিত হয়েছেন এবং ইতোমধ্যে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
কোভিড ১৯ ভাইরাসের ধার এখনও কমেনি ।সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে রোজ ।তাই সরকার ইতোমধ্যে সকলের জন্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলেক করেছেন ।প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে ।অন্তত:পক্ষে নাক মুখ ঢেকে থাকবে এমন মাস্ক পরতেই হবে ।মাস্ক না পরে বাইরে চলাফেরা মানে নিজেকে বিপদে ফেলা এবং অন্যের বিপদ ডেকে আনা ।কারও পক্ষে একান্ত সম্ভব নাহলে
তিনস্তর বিশিষ্ট সুতির কাপড়ের মাস্ক পরতে হবে ।তাতে কিছুটা হলেও সংক্রমণ আটকাতে পারে ।সার্জিক্যাল মাস্ক পরা সবচেয়ে ভালো হলেও এটি ডিসপোজেবল ।কিন্তু সব মানুষের আর্থিক সঙ্গতি সমান নয় ।প্রতিদিন ১ টি মাস্ক ব্যবহারের পর ফেলে দেয়ার সাচ্ছন্দ্য অনেকেরই নেই ।
এন ৯৫ মাস্কের মতোই কার্যকরী হলো কেএন ৯৫ এবং এফ এফ পি ২ মাস্ক ।পজিটিভ রোগীদের সংস্পর্শে এসেছেন বা চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মী নার্স এবং টেকনিশিয়ানদের এই মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক।হাসপাতালের জরুরী বিভাগেও এই মাস্ক ব্যবহার করা হচ্ছে ।তিনস্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক বা সার্জিক্যাল মাস্ক পরে বাইরে বেরোনো যেকোনও মানুষের জন্যে জরুরী ।মাস্কে যাতে নাক মুখ চিবুক ঢাকা পড়ে সেটি নজরে রাখতে হবে ।তবে আবদ্ধ ঘরে যে কোনও ধরনের সভার সময় অথবা রোজ অফিস যাতায়াতের ক্ষেত্রে যেখানে ভীড় রয়েছে সামাজিক দূরত্ব মানা যাচ্ছে না ,সেক্ষেত্রে তিনস্তর বিশিষ্ট মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে ।
কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে তা সাবান বা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে তিনটি মাস্ক একদিন অন্তর অন্তর ব্যবহার করা যায় ।এন ৯৫ কেএন ৯৫ বা এফএফপি২ মাস্কের ক্ষেত্রে মোট পাঁচটি কেনা থাকলে ভাল ।তাহলে প্রথম থেকে পন্চম নির্দিষ্ট করে নিলে প্রথম মাস্কটি ষষ্ঠ দিনে ব্যবহার করা যাবে ।এভাবে মোট দুইমাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে ।অবশ্য এগুলো কড়া রোদে রেখে ৪৮ ঘন্টা পর ব্যবহার করা যেতে পারে ।
বাঁচতে হলে মানতে হবে :
১.অবশ্যই সকলকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
২.মাস্ক হবে তিনস্তর বিশিষ্ট
৩.একান্তই সুতির মাস্ক পরা যায় তবে এটা বিজ্ঞানসম্মত নয় ।সার্জিক্যাল মাস্কই চিকিৎসাবিদ্যায় গ্রহণযোগ্য ।
৪.মাস্ক যেখানে সেখানে খোলা যাবেনা।খুব প্রয়োজন হলে মাথার পিছনে বা কানের পিছনের অংশ দিয়ে সন্তর্পণে খুলতে হবে ।
৫. মাস্কের ভিতরে একেবারেই হাত দেয়া যাবে না ।
মনে রাখতে হবে এন ৯৫ কেএন ৯৫ এবং এফএফপি২ মাস্কে সংক্রমণ রোধ হয় ৯৫ থেকে ৯৯ শতাংশ ।তিনস্তর বিশিষ্ট মাস্কের ক্ষেত্রে যা ৮৮ শতাংশ। তাই করোনার গ্রাস থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা সকলের জন্যে বাধ্যতামূলক ।যে কোনও ধরনের মাস্ক পরার আগে সাবান বা এলকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে।এরপর পরিচ্ছন্ন হাতে মাস্ক পরতে হবে ।নোংরা বা ভেজা মাস্ক যাতে কোনও ভাবেই ব্যবহার করতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ।সেই সঙ্গে অন্যের ব্যবহ্রত মাস্কেও হাত দেয়া যাবে না।