দেশে বর্তমানে কোনও রাজনীতি নেই বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। আওয়ামী লীগের ‘বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজকে দেশে কোনও রাজনীতি নেই। রাজনীতির নামে এখন পালাগান হয়। সন্ধ্যার সময় ওবায়দুলকাদের সাহেব এক পালা গান। বিএনপি ওই গান শুনে এর একটু পরেই টেলিভিশনে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আরেক পালা গান। আমরা রাজনীতিবিদরা ঘরে বসে টেলিভিশনে পালা গানের রাজনীতি দেখছি।
সোমবার (২৮ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রত্যেকটা জেলার রাজনীতি দেওয়া হয়েছে সচিবদের। প্রধানমন্ত্রী ডিসি সাহেবদের সঙ্গে কথা বলেন, আর এমপিরা পাশে বসে থাকেন দূরে। তারা বলেন, ‘ডিসি সাহেব আমি একটু কথা বলবো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।’ এই হচ্ছে রাজনীতিবিদদের অবস্থা। প্রধানমন্ত্রী যখন ডিসিদের সঙ্গে কথা বলেন, তখন এমপিদের কোনও দাম থাকে না।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘রাজনীতি না থাকায় রাজনীতির মঞ্চগুলো আস্তে আস্তে ব্যবসায়ীরা দখল করেছেন। ব্যবসায়ীদের হাতে তো ব্যবসার চালিকা শক্তি ছিলই। অর্থনীতির চালিকা শক্তি তাদের কাছে। এখন রাজনীতিও তাদের হাতে। এখন দেশ চালাচ্ছে জগত শেঠরা, দেশ চালাচ্ছে আমলারা। আমরা রাজনীতিবিদরা এখন তৃতীয় লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এই হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্য। অথচ রাজনীতিবিদরা দেশটা স্বাধীন করেছে। রাজনীতিবিদ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট থাকে না।’
এই রাজনীতিক বলেন, এবারের বাজেটটা আগাগোড়া ধনীদের স্বার্থে এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থে প্রণয়ন করা হয়েছে। ১৯৭২ সালে এই সংসদে রাজনীতিবিদদের সংখ্যা ছিল ৯৫ পারসেন্ট, আর ৫ পারসেন্ট ছিল ব্যবসায়ী। আর আজকে ২০২১ সালে ৭৫ পারসেন্ট ব্যবসায়ী, আর ২৫ পারসেন্ট রাজনীতিবিদ। এই হচ্ছে অবস্থা বাজেটের। অর্থমন্ত্রী একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। স্বভাবত কারণেই তাদের স্বার্থেই এবং তাদের জন্যই বাজেট প্রণয়ন করা হবে। এখানে বৈষম্যের কোনও রূপরেখা থাকবে না। এই বাজেট দেওয়ার ফলেই ধনী আরও ধনী হবে, গরিব হবে আরও গরিব বলে মনে করি।