১৯৮৮ সালের পর বাংলাদেশে এ বছরের বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। বন্যার পানি বেড়েই চলছে যা আগামী মাসের আগে কমবে এমন সম্ভাবনাও কম।
র্বতমানে বন্যার পরিস্থিতি মৌসুমের সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে বন্যায় আক্রান্ত ২১টি জেলা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৯ লাখেরও বেশি মানুষ। গত মঙ্গলবার থেকে আবারও পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির এই প্রবাহকে বন্যার তৃতীয় ঢল বলা হচ্ছে। এবারের বন্যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় রূপ নিতে পারে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, গতকাল ১৭টি নদীর পানি ২৮টি পয়েন্টে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আগামী ২৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ধরলা, তিস্তা ও মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদনদীগুলোয় পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া ঢাকার আশপাশের নদনদীর পানি বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটতে পারে। এদিকে বন্যার পানি আবার বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো পানিবন্দি মানুষ। বন্যাদুর্গত এলাকায় তলিয়ে গেছে স্কুল, হাটবাজার, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এখন নৌকা। অনেকে কলাগাছের ভেলা ব্যবহার করছেন। অধিকাংশ জায়গায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। বাড়ছে রোগ-ব্যাধি। দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের তীব্র সংকট। সরকারের পক্ষ থেকে কোথাও কোথাও ত্রাণ দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য সম্প্রতি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে ৫২ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল দিয়েছে সংস্থাটির সেন্ট্রাল ইমারজেন্সি রেসপন্স ফান্ড (সিইআরএফ)। এ তহবিলের মাধ্যমে অংশীদারদের সহায়তায় গত ১১ জুলাই থেকে দুর্গতদের কৃষিজাত সরঞ্জাম সুরক্ষায় সিলযোগ্য ড্রাম সরবরাহ, স্বাস্থ্য ও পরিচছন্নতা উপকরণ, নগদ অর্থ বিতরণের মতো প্রাথমিক সাহায্য দেয়া হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান তান্ডবের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করে চলমান করোনা মহামারির কারণে বন্যায় সহায়তা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা কঠিন হয়ে পড়বে।