1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন

কাটছে না অপেক্ষার প্রহর ভ্যাকসিন জটিলতায় প্রবাসীরা

মাসুম হোসাইন:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৩ মে, ২০২১
  • ৩০০ বার পঠিত

করোনা মহামারি যুদ্ধে ভ্যাকসিনই এখন সবচেয়ে বড় অস্ত্র। এই ভ্যাকসিন নিয়ে দেশে থাকা প্রবাসীরা বড় জটিলতায় পড়েছেন। যেসব দেশে এখন প্রবাসীরা যেতে পারছেন সেখানে ভ্যাকসিন সনদ নিয়ে যেতে হচ্ছে।তা না হলে নিচ খরচে সাত থেকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে। জনশক্তি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন অনেক দেশেই কর্মী যাচ্ছে না। সামনে এখানে জনশক্তি যাওয়া শুরু হলে নতুন জটিলতা তৈরি হবে। কারণ সামনে আর কোনো দেশই টিকা ছাড়া জনশক্তি নেবে না। তাই প্রবাসীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার পরামর্শ তাদের।

ভ্যাকসিন কার্যক্রমের প্রথম দিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, যারা বিদেশ যেতে চাইবেন, তাদের ভ্যাকসিনের ডবল ডোজের সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে হবে।প্রবাসীরা যে দেশে যাবেন, সে দেশের কর্তৃপক্ষ এটা দেখতে চাইবে। মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরও প্রবাসীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। অনেকে বলছেন, অন্যান্য পেশার মানুষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন পেলেও যারা দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখছে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।সরকারের কাছে তারা অগ্রাধিকারভিত্তিতে ভ্যাকসিন পেতে চান। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন সংকটে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) ও অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার আগে বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি মাসে ৬০ হাজারের কাছাকাছি শ্রমিক বিদেশ যেতেন। বর্তমানে এর সংখ্যা কয়েক হাজারে ঠেকেছে। যেতে চাইলেও করোনার কারণে যেতে পারছেন না। অনেকে দেশে এসে আটকা পড়ছেন। তবে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চালু হওয়ায়,কিছুসংখ্যক প্রবাসী ফিরে যেতে পেরেছেন। এদিকে বিশ্বের অনেকে দেশ তাদের দেশের জনগণকে ভ্যাকসিনের আওতায় এনেছে। এতে আমাদের দেশ থেকে বিদেশগামীরা ভ্যাকসিন গ্রহণ না করে বাইরে যেতে পারবেন না। যেকোনো সময়, যেকোনো দেশ এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।তাই দেশে আটকে পড়া ও বিদেশ গমনে ইচ্ছুক নতুন কর্মীদের জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা উচিত।
ইতালি ফেরত আব্দুর রাজ্জাক নাগরিক খবর কে বলেন, ৪ মাস আগে ইতালি থেকে দেশে এসেছি। দেশে করোনার ভ্যাকসিনের কার্যক্রম শুরু হলেও বয়স জটিলতার কারণে

ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারিনি। আগামী ২ মাসের মধ্যে আমাকে ইতালি যেতে হবে। এখনো ভ্যাকসিন নিতে না পাড়ায় দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। ভ্যাকসিনের কারণে যদি আবার সে দেশে প্রবেশ করতে না দেয় তাহলে বড় ক্ষতির মুখে পড়ে যাবো।করোনার কারণে দেশে আটকে পড়া সৌদি প্রবাসী কামাল মাতব্বর বলেন, ৭ মাস আগে সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছি। এরই মধ্যে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে ভিসার প্রসেসিং চলছে। বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি এখন সৌদি গেলে সে দেশে নিজ খরচে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়। এতে ব্যাপক খরচ। প্রায় এক লাখের কাছাকাছি। কোন প্রবাসী যদি দেশ থেকে ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পন্ন করে যায়, তাহলে তার জন্য সেই অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে না। তাই আমি ভ্যাকসিন দিয়ে বিদেশ যেতে চাই।আমাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন পাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হোক।

জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জেপি ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার জামাল হোসেন নাগরিক খবর কে বলেন, করোনার কারণে দেশ থেকে প্রবাসী কর্মীরা যেতে পারছেন না।

সীমিত পরিসরে কিছু দেশে লোকজন পাঠাতে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট লাগছে। আবার ভ্যাকসিনের সনদ চাওয়া হচ্ছে। সমস্যা হলো দেশের অনেক প্রবাসী ভ্যাকসিন নিতে পারেনি। অনেকে প্রথম ডোজ নিলেও দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করতে পারেনি। এতে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের সংশয়। তাই সরকারের উচিত দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সকল প্রবাসীদের ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা।

আল-হাসেম ট্র্যাভেলস্‌ের আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রবাসীদের ভ্যাকসিন দেয়া নিয়ে সরকারের তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ থেকে যেকোনো দেশে যেতে হলে ভ্যাকসিন নেয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেশের প্রবাসীরা অনেক পিছিয়ে আছে। ভ্যাকসিন না নেয়ার কারণে আমরা কর্মী পাঠাতে পারছি না। গত কয়েক মাস ধরে অনেকের ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন হলেও ভ্যাকসিন না পাওয়ায় তারা যেতে পারেনি। এখন তারা ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনেকে ১ম ডোজ টিকা নিলেও ২য় ডোজ পায়নি।

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান নাগরিক খবরকে বলেন, করোনার শুরু থেকে ৫ লাখ লোক দেশে ফেরত এসেছে। এদের মধ্যে একটা অংশ দেশে আটকা পড়েছেন। আর একটা অংশ প্রবাসে ফেরত গেছেন।

 

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত এক লাখ কর্মী বিদেশ গেছেন। অনেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। বর্তমানে তো সাধারণ নাগরিকরাই ভ্যাকসিন নিতে পারছেন না। প্রবাসীরা ভ্যাকসিন নিবেন কীভাবে? পরবর্তীতে সরকারের ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালু করলে সকল প্রবাসীকে স্বেচ্ছায় ভ্যাকসিন নিতে হবে। এতে তারা যাতায়াতে সুবিধা পাবেন।

 

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা)-এর সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান নাগরিক খবর কে  বলেন, বর্তমানে বিদেশ গমনেচ্ছুক ৭০ থেকে ৮০ হাজার কর্মীর ভিসা প্রসেসিংয়ের মধ্যে আছে। এদের বেশির ভাগ এখনো ভ্যাকসিন পায়নি। খুব অল্পসংখ্যক প্রবাসী ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। এরা দ্বিতীয় ডোজ কখন নিতে পারবে তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।ইতিমধ্যে সৌদি সরকার ভ্যাকসিন ছাড়া কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর হয়েছে। ভ্যাকসিন ছাড়া করোনার নেগেটিভ সনদ নিয়ে গেলেও নিজের অর্থে সাত থেকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়।এতে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকা অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে প্রবাসী কর্মীদের। তবে যারা ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পন্ন করেছেন তাদের শুধু নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে গেলেই হয়। বিশ্বের অনেক দেশেই এখন প্রবেশ বন্ধ। খুলে দিলে তারাও করোনার ভ্যাকসিন দেয়া ছাড়া কোনো কর্মীকে তাদের দেশে ঢুকতে দিবে না।

বিষয়টি নিয়ে আমরা সরকারের কাছে একাধিক বার দাবি জানিয়ে আসছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রবাসীদের ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলেছি।স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। তবে তা এখনো কার্যকর হয়নি। আমরা চাই, দেশে নতুন করে ভ্যাকসিন আসা মাত্র প্রবাসীদের অগ্রাধিকার দেয়া হোক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com