রাজধানীর গুলশানে মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামে এক তরুণীকে আত্নহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে দায়ী করে মামলা দায়ের করেছেন ঐ তরুণীর বোন নুসরাত জাহান। সায়েম সোবহান আনভীর বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের ছেলে।রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর মুনিয়ার বড় বোন সোমবার গভীর রাতে এই মামলা করেন।
গুলশান জোনের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মৃত তরুণীর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার মনোহরপুরের উজীর দীঘির পাড়ে৷ সে রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান।
উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানান, সোমবার সন্ধ্যার দিকে গুলশান ২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের ফ্ল্যাট থেকে ওই তরুণীর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।’
মামলার বরাত দিয়ে উপকমিশনার বলেন, ‘মেয়েটির সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান তানভীরের সম্পর্ক দুই বছরের। আনভীর এক বছর মেয়েটিকে বনানীর ফ্লাটে রাখেন। পরে আনভীরের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি কুমিল্লায় চলে যান। তবে মার্চ মাসে ঢাকায় এসে গুলশানের ওই ফ্লাটে থাকা শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘২৩ এপ্রিল একটি ইফতার পার্টি হয় ওই বাসায়। ওই পার্টির ছবি ফেসবুকে আপলোড করা হলে মেয়েটির সঙ্গে আনভীরের মনোমালিন্য হয়। পরে মেয়েটি তার বোনকে ফোন করে জানান, যে কোনো মুহূর্তে তার যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে।
এই ফোনের পর কুমিল্লায় থেকে সোমবার বিকেলে ঢাকায় আসেন ওই তরুণীর বোন। তবে গুলশানের ফ্লাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান তিনি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোবার ঘরে তরুণী ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
উপকমিশনার সুদীপ বলেন, ‘সাক্ষ্য প্রমাণ হাতে আসলে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান তানভীরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। গুরুত্ব বিবেচেনায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্ত করছেন জানিয়ে উপকমিশনার বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আসবে।
এক প্রশ্নের জবাবে উপকমিশনার বলেন, ‘চুক্তিপত্র অনুযায়ী ওই ফ্লাটের মাসিকভাড়া ১ লাখ টাকা। এবং অগ্রিম দেয়া হয়েছে দুই লাখ টাকা। এরই মধ্যে দুই মাসের ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে।’
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিকভাবে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের আগে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে না।
এছাড়াও মৃত্যুর আগে মুনিয়া ও সায়েম সোবহান তানভীরের একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে।