কাউসার
আমার তো নদীর কাছে যাইতে ইচ্ছা করে ! দুরের একলা বয়ে চলা নদী। যে তীরে এখনো ধরেনাই ভাঙন; সেই তীরে বইসা জানতে ইচ্ছা করে- নদীর কোনো দুঃখ আছে কিনা। ব্যথা পাইলে সে সে কি আমার মতন দম আটকাইয়া বইসা থাকে নাকি ফ্যালফ্যালাইয়া কাইন্দা দেয়, আমার জানতে ইচ্ছা করে।
বন্ধু আমার একটা আকাশ বানানো হইলো না ! যেই আকাশে আমার লেখা একখান কবিতা ছাপা হইবো। তামাম দুনিয়া হা কইরা পাঠ করবে সেই কবিতাখান। আমার তো কবিতাই লেখা হইলো না বন্ধু!
তোরে আমার কত কথা বলার আছে কাউসার। সকল কথা জইমা আছে গলার কিনারে। পুরান যন্ত্রপাতি মেরামত করে, এমন একটা দোকানের সামনে খাড়াইয়া পোড়া খনিজের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে আমি তোরে কমু আমার গলায় মাছের কাঁটার মতো বিঁধে থাকা কথাগুলা।
কাউসার-আমি শুনেছি হরিয়ান ইস্টিশনের কাছে মাটির উপর বইসা থাকে মেলা রঙের ঝরা পাতা। আমার তো ইচ্ছা করে, ওই পাতাগুলার কাছে যাই। গাছ তাদের ছুঁইড়া ফালাইলো নাকি তারাই ছাইড়া আসলো গাছের মায়া, আমার জানতে ইচ্ছা করে।
আমার চিত হয়ে শুইয়া থাকতে ইচ্ছা করে বাংলাদেশ-ভারতের নো ম্যানস ল্যান্ডে। গলা ছাইড়া গাইতে ইচ্ছা করে হাছন রাজার একখান গান। আমার গান গাওয়া হইলো না বন্ধু ! আমার দুঃখ গান হইয়া আর উইড়া গেলো না।
কাউসার – এই সমস্ত ইচ্ছার কবর দিতে দিতে আমার মইরা যাইতে ইচ্ছা করে। আমার এই ইচ্ছাটাও পূরণ হয় না বন্ধু। সবাই কয়- বাঁইচা থাকোন দরকার। আমি দেখি, আমার লাশ নিয়ম কইরা কাজে যায়। মানুষের পিছে দৌড়ায়। ক্লান্ত হয়। হেরপর ঘুমাইয়া যায়।
লেখক:
রুবায়েত হোসেন অনতু