ক্ষমা এক আশ্চর্য গুন। আশ্চর্য রকম নিরাময়। শান্ত এবং কঠিন। স্বচ্ছ এবং সুন্দর। জিউনিস্ক এর মতো ! ভোরে ফুটে ওঠা হালকা নীলাভ ফুল! পাখির ডাক! লুকায়িত সুখ !
নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে, অপরের চোখে নিজেকে দেখতে দেখতে যখন এক গভীর বিষাদ বুকে জমা হয় তখন হয়তো মানুষ নিজেই নিজের মনের আয়নার সামনে দারায় নিজেকে দেখে
আর মুগ্ধ হয়। ভাবে, বেশ তো আছি, একাকীত্বে! ক্ষতি কী! থাকুক যে যার মতো, আনন্দে। আমার তো অভিযোগ নেই কারো প্রতি! প্রত্যাশাও নেই! শুধু ভালোবাসা ভেবে দাবি ছিল কিছু। আবদারও হয়তো।
দেওয়ালে মাঝেমধ্যে পিঠ ঠেকে যাওয়া ভালো।
দেওয়ালে পিঠ ঠেকলে যেমন মানুষ চেনা যায়
তেমনি দেওয়াল ও সুযোগ পেয়ে বলে ওঠে
এখানে আর যায়গা নেই সরে দাড়াও……
মানুষ তখন তার নিজেকে চিনতে পারে
নিজেকে দেখে। যাচাই করে।
সে বুঝতে পারে এই পৃথিবীতে প্রয়োজন ফুরালে কেউ কারো নয়।
জীবনে যে যত বেশি হেরেছে সে ততো বেশি শিখেছে।
মানুষ তার ব্যার্থতার সমান শক্তিশালী
অভিজ্ঞতার সমান আত্মবিশ্বাসী।
নদী কখনও নিজের কাছে ফেরে না।
শুধু চলাচলের শব্দ তাকে নোনা জলের কাছে নিয়ে যায়। সরাসরি নিয়ে ফেলে মৃত্যুর কাছে। ফেরা নেই তার।
মানুষের কিন্তু অতীত আছে। অতীতের কাছে ফেরা আছে। যদিও ভীষণ, ভয়ঙ্কর সত্য এই অতীত। তাকে নিয়েই চলতে হয় সারাজীবন!
অতীতে পোষমানা অসংখ্য মুখোশধারি মানুষ রূপি কালসাপ হৃদয়ে ফনা তুলে তার বিষাক্ততা ছরায় সারা শরীর জুড়ে।
ভেঙে ফেলতে চায় হৃদ জমিনের এপার ও পার।
কিন্তু মানুষের মন বড়ই বিচিত্র
সে কখনো বুঝতে চায় না অতীত ক্যাবলই অতীত, তাকে বর্তমানে মনে করা ও এক ধরনের বোকামি। যে সময়, যে মানুষ, যে সব কিছু জীবন থেকে অতীত হয়ে গেছে তা কখনো ফিরে পাবার নয়।
জীবনে যে যতো বেশি অতীত কে বাদ দিয়ে নতুন কে স্বাগতম করতে পারে সে ততো সুখী।
আর ক্ষমা হলো, সেই পবিত্র ভবিষ্যৎ। যে তোমাকে সহজেই আলোর কাছে, বোধের কাছে,নিজের কাছে নিয়ে আসে…
নিজের কাছে নিজে থাকার মতো সুখ হয়তো পৃথিবীতে আর নেই—–
ক্ষমা মানুষ কে মহৎ করে বিনয়ী করে তোলে
জীবনে যে যত বেশি ক্ষমা করতে পেরেছে
তার অভিযোগ এর খাতা ততটাই শূন্য।
প্রতিশোধ না নিয়েও প্রতিশোধ নেওয়া যায়
ক্ষমা করার থেকে বড় প্রতিশোধ হয়তো পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আর নেই।