দুই লাখ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকারের জন্য হবিগঞ্জের বাহুবলে এক মা ও তার আট বছরের মেয়েকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে ৩ ঘাতক । শনিবার (২০ মার্চ) রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।
এর আগে, শনিবার বিকেলে হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মূল ঘাতক আমীর হোসেন (৩০)। শুক্রবার রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বাহুবল থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত অঞ্জলী দাশের স্বামী সঞ্জিত দাশ।
লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের দুদিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন পুর্বক মুল ঘাতক আমীর হোসেন ও তার সহযোগী মনির মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আমীর হোসেন সিলেটের শাহপরান থানার চৌকিদিঘী এলাকার আলমগীর মিয়ার ছেলে। তার স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাণ্ডের সময় জড়িত অপর আসাসি মনির মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারক্তিতে পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা, মোবাইল ফোন ও কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরোও জানান, বাহুবল উপজেলার দীগম্বর বাজার এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিত দাশ (৪৫) ও আমীর হোসেন পূর্ব পরিচিত। প্রায় তিন মাস আগে সঞ্জিত দাশের মাধ্যমেই আমীর হোসেন পার্শ্ববর্তী বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। কয়েকদিন আগে আমীর হোসেন সঞ্জিতের বাসায় এসে তিন হাজার টাকা ধার নেন এবং জানতে পারেন তাদের বাসায় আরও দুই লাখ টাকা এবং সোনার বালা রয়েছে। গত ১৮ মার্চ সঞ্জিত তার স্ত্রী অঞ্জলী মালাকার (৩০) ও মেয়ে পূজা রাণী দাসকে (৮) বাসায় রেখে ব্যবসার কাজে সুনামগঞ্জ যান। ওইদিন মা-মেয়ে বাসায় একা থাকার সুযোগে আমীর তার আরও দুজন সহযোগীকে নিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করতে আসে। এক পর্যায়ে মা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যার পর তাদের ব্যবহৃত ছুরি একটি পুকুরে ফেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে আমীর হোসেন নিজেই তার হাত কেটে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে পার্শ্ববর্তী জমিতে পড়ে থাকেন। তিনি মানুষকে বোঝাতে চান ডাকাতরা দুজনকে হত্যা করেছেন। এরপর স্থানীয়রা তাকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এসপি আরও জানান, পুলিশের সন্দেহ হলে আমীর হোসেনকে হাসপাতাল থেকেই আটক করা হয়। তার কথা মতো মনিরকে গ্রেফতার করা হয়। পলাতক আরোও এক আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ জাতীয় আরো খবর..