জমি ক্রয়-বিক্রয়, চাকরির প্রলোভন, বিদেশি প্রজেক্ট তৈরি কিংবা সরকারি দপ্তরে কাজ পাইয়ে দেয়ার নামে বহু মানুষের কাছ থেকে প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে শামসুদ্দোহা চৌধুরী ওরফে বিপ্লব নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাতে রাজধানীর মিরপুর শাহআলীবাগ থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
তার বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার থানায় প্রতারণাসহ ৩৮টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে প্রতারণা সংক্রান্ত অসংখ্য জিডি এবং লিখিত অভিযোগ। বিপ্লবের প্রতারণার ভুক্তভোগীদের একজন রাজধানীর জুরাইন এলাকার ইট, বালু, পাথর ও সিমেন্ট ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধুর মাধ্যমে দোহার (বিপ্লব) সঙ্গে পরিচয়। সর্বপ্রথম আমি তাকে পাথর সাপ্লাই করি। পাথরের বিলের জন্য গেলে সে আমাকে ৩১ লাখ টাকার চেক দেয়। সেই চেক পাশ হয়নি। সে আমাকে আরও একাধিক প্রজেক্ট দেখিয়ে রড, সিমেন্ট নেয়। আমাকে সামিট গ্রুপের সঙ্গে এলইডির ৬’শ কোটি টাকার প্রজেক্টের কথা বলে সাপ্লায়ার ও লাভের আশা দেখায় সে। তিন-চারবার চেক নিয়ে ঘোরার পড়ে একপর্যায়ে আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হই।
এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘রড, সিমেন্ট, বালু, পাথরসহ বিভিন্ন সময় তাকে নগদ টাকাও দিয়েছি। সব মিলে এক কোটি ৯১ লাখ টাকার চেক পেয়েছি। আমি শামসুদ্দোহা চৌধুরী বিপ্লবের বিরুদ্ধে এক কোটি ৬০ লাখ টাকার প্রতারণা মামলা করেছি। আমরা ব্যবসায়ীরা একটু লোভী। লোভে পড়ে আমার এত বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। বুঝতে পেরে যখন টাকা ফেরত চাইতাম তখন সে রেডিসনে ডেকে নারীদের ব্যবহার করতে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল। বুঝতে পেরে পালিয়ে আসি।
আরেক ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা কর্মকর্তা। তার কাছ থেকে দোহা হাতিয়ে নেন ৮৫ লাখ টাকা। এ ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘স্ত্রীর বান্ধবীর পরিচিত দোহা। সেই সুবাদে প্লট কেনার প্রস্তাব আসে। জমি কিনতে গিয়ে এক রকম বিশ্বাস করে ৮৫ লাখ টাকা ক্যাশ দেই। ৭ বছর ঘুরে সেই জমি পাইনি। পরে ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে বুঝতে পারি ভুয়া দলিল দেখিয়ে প্রতারণা করেছে। সে সব স্বীকার করে ফের প্রতারণা করে। সিটি ব্যাংকের চেক দেয়। যে চেকে ওই ৮৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।