দেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে প্রতিশ্রুতির প্রথম পর্যায়। ভূমিহীন হতদরিদ্রদের একসঙ্গে ৭০ হাজার বাড়ি ও ২ শতাংশ করে খাসজমি তুলে দেওয়ার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ঠিকানাবিহীন এই মানুষ স্থায়ী বাড়িতে ওঠার আনন্দে উদ্বেল, আবেগাপ্লুত। তারা মনে করছেন, এই উদ্যোগ তাদের নতুন করে বাঁচার নিশ্চয়তা দেবে।
দেশে গৃহহীন হতদরিদ্র পরিবারকে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী নিবাস গড়ে দিচ্ছে সরকার। তারই প্রথম ধাপের উদ্বোধন করা হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ বাগেরহাটের উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলায়। এই এলাকায় ভিটেমাটিহীন এমন ২০০ পরিবারের মানুষ এখন নতুন বাড়ি পেয়ে আরো আত্মবিশ্বাসী বাঁচার আনন্দে।
শরণখোলার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রায় ৮০ বছরের প্রৌঢ় ফরাজী মিয়া, যত্ন আর আদরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন সরকারের দেওয়া নতুন বাড়ির ঘর-বারান্দাসহ সবকিছু। উপকূলঘেঁষা বাগেরহাটের প্রত্যন্ত উপজেলা শরণখোলার ভূমিহীন এই বৃদ্ধ সারাজীবন খেটেও বন্দোবস্ত করতে পারেননি, নিজের কোনো ঠিকানার। জীবন সায়াহ্নে তার সেই হতাশা এখন দূর হওয়ার পথে।
আবেগাপ্লুত ফরাজী মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে নাগরিক খবরকে বলেন, জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। আমার পক্ষে এমন বাড়ি করা সম্ভব ছিল না, যদি না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে না দিতেন। তিনিই আমাদের অভিভাবক।
সরকারের পক্ষ থেকে এমন ব্যবস্থা না করা হলেও অধিকাংশ ভূমিহীন হতদরিদ্র পরিবারগুলোর পক্ষে এমন একটা পাকা বাড়ি করা সম্ভব ছিল না দাবি তাদেরই। তারা বলছেন, সরকারের দেয়া ঘর ও জমি পেয়ে তারা অত্যন্ত আনন্দিত। নিশ্চিন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়েও। তারা জানান, আগে ঝড়, বন্যায় সন্তানদের নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাই ছিল একমাত্র সাইক্লোন শেল্টার। তবে এখন সরকারের দেয়া পাকা ঘর হওয়ায় নিশ্চিন্তে আশ্রয় পেয়েছেন তারা।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সারাদেশে একযোগে ৭০ হাজার সেমিপাকা ঘর ও খাসজমি হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৪৩৫ বর্গফুটের দুই কক্ষবিশিষ্ট এই বাড়ি আবাসনের পাশাপাশি নিশ্চিত করবে প্রান্তিক নিঃস্ব মানুষের স্যানিটেশন ব্যবস্থাও। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারাদেশে যে তালিকা করা হয়েছে সেখানে রয়েছে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি হতদরিদ্র ভূমিহীন পরিবার। মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে দুই কক্ষবিশিষ্ট এই ঘর এসব হতদরিদ্র পরিবারকে প্রদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্টদের দাবি, একসঙ্গে এত বাড়ি হস্তান্তরের এই মানবিক উদ্যোগ বিশ্বে নজিরবিহীন। আর এমন উদ্যোগ বাস্তবায়নের ফলে সবার জন্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের যে লক্ষ্য তাতে অনেকটায় এগিয়ে গেছে দেশ এমনটায় বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ জাতীয় আরো খবর..