৯৯৯-এ কল পেয়ে নির্যাতনের শিকার ১২ বছরের এক শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের নিজ বাড়ি হতে গৃহকর্মীকে উদ্ধার করা হয়।
গুরুত্বর জখম এই শিশুটিকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলেও সেখান থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।নির্যাতিতা আঁখিমনি বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের ভিক্ষুক মৃত. বাছেদ আলীর মেয়ে।
আঁখিমনির মা শিরিনা খাতুনের অভিযোগ, ডালিম চন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে তার মেয়ে গত দুই বছর গৃহকর্মীর কাজ করতো রংপুর শহরের আর্দশপাড়া মহল্লার দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগম এবং রেজাউল বারী দম্পতির বাসায়। রেজাউল বারী সরকারী চাকরি করেন নওগাঁয়। শনিবার (২৮ নভেম্বর) ডালিম চন্দ্র রায় আমাকে রংপুরে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে গেলে তারা জানায় আমার মেয়ে টাকা চুরি করেছে। তাই তারা তাকে আর বাসায় রাখবে না। আমার মেয়ে টাকা চুরির কথা অস্বীকার করে। তবুও বাড়ির লোকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন ও গোপনাঙ্গে গরম ছ্যাকা দিয়েছে। এ অবস্থায় দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগম ও তার স্বামী রেজাউল বারী ৩০০ টাকার একটি সাদা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নিয়ে মেয়েকে আমার হাতে তুলে দেয়। আমি মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসি। এখানে এসে মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে ডেকে বিস্তারিত জানাই। সোমবার দুপুরে গ্রামের লোকজন পুলিশকে খবর দেয়।
গ্রামের নুরউদ্দিন জানান, বিষয়টি জানার পর আমরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে বিস্তারিত খুলে বলি। এরপর কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ এসে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাঃ সাবির হোসেন সরকার জানান, শিশুটির সারা শরীরে ও তার গোপনাঙ্গে ক্ষতর চিহ্ন রয়েছে। তাই বিলম্ব না করে পুলিশের মাধ্যমে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল (ওসিসি) ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়।
নির্যাতনের শিকার আঁখিমনি কান্না বিজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলে, ওই দাঁতের ডাক্তার, ডাক্তারের স্বামী রেজাউল বারী, তার মা খালেদা বেগম তাকে নির্যাতন করে ও প্রস্রাবের স্থানে গরম ছ্যাঁকা দেয়।
কিশোরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজুল হক জানান, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে আঁখিমনিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। মেয়েটিকে রংপুর জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে চিকিৎসকের পরামর্শে রংপুর মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল (ওসিসি) ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।