কুমিল্লায় এক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে প্রেম করায় প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের পিটুনির পর মাহিন মিয়া (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। মরদেহ বাড়িতে আনার পর মাহিনের বাবা হীরণ মিয়া (৫০) মারা গেছেন। জেলার আদর্শ সদর উপজেলার মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামে আজ রোববার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে স্কুলছাত্রীর পরিবার।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মাহিনের সঙ্গে প্রতিবেশী সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীর এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে মাহিনকে ওই কিশোরীর বাবা ও পরিবারের লোকজন তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে বেদম পিটুনি দিয়ে আটকে রাখে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসা শেষে রোববার সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মাহিনকে ছাড়পত্র দেয়। পরে মাহিন হাসপাতাল থেকে বাড়ির সামনে যাওয়ার পর হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এতে আবারও তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা জানান, ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে ও লাশ দেখে বাবা হীরণ মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়ির লোকজন তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে বাবা-ছেলের মৃত্যুর পর প্রেমিকার বাবা ও চাচাসহ স্বজনরা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।
নিহতের ছোট ভাই আলম মিয়া জানান, তার বড় ভাই মাহিনের সঙ্গে প্রতিবেশী ওই কিশোরীর এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে মাহিনকে কিশোরীর বাবা মোজাম্মেল হক ও চাচা জাহাঙ্গীর হোসেন বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। পরে মাহিনকে বেদম পিটুনি দিয়ে আটকে রাখেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মাহিনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ওই স্কুলছাত্রী জানায়, সে স্থানীয় আক্তারুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবা ও চাচা মাহিনকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। সে এ ঘটনার বিচার চায়।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য হাফিজ উদ্দিন জানান, ছেলেটির পরিবার নিরীহ। সে টাইলসের কাজের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে ভাতের হোটেলের ব্যবসা করত। বৃহস্পতিবার রাতে ডেকে নিয়ে ছেলেটিকে পিটিয়ে আহত করে মেয়েটির বাবা মোজাম্মেল ও চাচা জাহাঙ্গীর। সকালে মৃত্যুর খবর শুনে হত্যায় জড়িতরা বাড়িঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে গেছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোরশেদ বলেন, নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা দেবে বলে জানিয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।