পদ্মা সেতুর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হবে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল)। দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে রওনা হবে রেলের গ্যাংকার। প্রায় ৪১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়া প্রান্তে এসে থামবে। এই ট্রেনে থাকবেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। একইসঙ্গে অর্থনৈতিকভাবেও সমৃদ্ধ হবে অঞ্চলগুলো। এদিকে, ২০২৪ সালে সম্পূর্ণ প্রকল্পের কাজ শেষ করার আগেই ঢাকা থেকে ভাঙ্গায় ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত বছর ২৫ জুন পদ্মা সেতুর ওপর সড়ক পথের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ২৩ জেলার মানুষের জীবনযাত্রার মান ও যোগাযোগের উন্নয়ন হয়েছে। এর পাশাপাশি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ তা আরও কয়েকগুণ বাড়াবে। শুধু স্থানীয়ভাবেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এর সুফল ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল জানান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মোট ১৭২ কিলোমিটার অংশ তিন ভাগে ভাগ করে চলছে কাজ। এরমধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের অগ্রগতির ৭৪ শতাংশ, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি ৯২ শতাংশ এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ। তবে সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ জানান, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা অংশের কাজ ৯২ শতাংশ সম্পন্ন। এই সেতুর ওপরে কাজটি ছিল কঠিন। যেহেতু এর কাজ হয়ে গেছে, আগামী জুনের মধ্যে একটি পর্যায়ে চলে আসবে। আশা করি জুলাইয়ের মধ্যে ঢাকা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে। সেই প্রেক্ষাপটে আগস্টের মধ্যেই ঢাকা থেকে ভাঙ্গা রেল চলাচল শুরু করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে উদ্বোধনের কথা রয়েছে রেল প্রকল্প। এর জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন ১৪টি স্টেশন ও ৬৬টি বড় সেতু। এ ছাড়াও ছয়টি পুরোনো স্টেশন পুনর্নির্মাণ ও ২৫৪টি ছোট সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ১০০টি ব্রডগেজ রেল কোচ কেনা হবে। ইতোমধ্যে চীন থেকে বেশ কিছু কোচ আনা হয়েছে। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।