কুমিল্লার তিতাস উপজেলার শোলাকান্দি গ্রামে নিজের বাড়িতে ছেলের বউ ও নাতি-নাতনিকে নিয়ে বসবাস করতেন স্বামী হারা ৭৫ বছরের বৃদ্ধা মিনরা বেগম। মিনরা বেগম ওই গ্রামের তারা মিয়া বেপারীর স্ত্রী।
গভীর রাতে হিন্দু প্রেমিক ও মুসলিম প্রেমিকাকে এক সাথে দেখে ফেলায় গত ৬ ডিসেম্বর রাতে বৃদ্ধা মিনরাকে নিজ ঘরে প্রথমে শ্বাসরোধ পরে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করে এ ঘাতক প্রেমিক-প্রেমিকা।
এ ঘটনার পরদিন তিতাস থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ছেলে আবুল বাশার ভাসানী। পরে থানা পুলিশ থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণ করে জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) পুলিশ। এরপর এক মাস সাত দিনের মধ্যেই ঘাতক প্রেমিক যুগলকে আটক করে ক্লু-লেস মামলাটির হত্যা রহস্য উদঘাটন করেন ডিবি পুলিশ। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দেন।
হত্যার দায় স্বিকার করা আসামীরা হলো, উপজেলার শোলাকান্দি গ্রামের শিপন সরকারের মেয়ে সাইফা আক্তার (১৭) ও পার্শ্ববর্তী দাউদকান্দি উপজেলার গোপচর গ্রামের অন্তর দাস (১৮)।
ডিবি’র ওসি রাজেশ বড়ুয়া আদালতের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্ত সাইফা আক্তার ও অন্তর দাসের মধ্যে গত ৭/৮মাস পূর্বে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং মাঝে মধ্যে রাতে সাইফাদের বাড়িতে দেখা করতো প্রেমিক অন্তর দাস। ঘটনার কিছুদিন পুর্বে থেকে সাইফাদের বাড়িতে বিল্ডিং নির্মানের কাজ চলমান থাকায় প্রতিবেশী মৃত তারা মিয়ার স্ত্রী ভিকটিম মিনরা বেগমের বিল্ডিংয়ে অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকতো সাইফা ও তার ছোট দুই ভাই।
এই সুবাধে অন্তর দাসের সাথে অন্তরঙ্গতা আরো বেড়ে যায় এবং গত ৬ডিসেম্বর রাতে ভিকটিম মিনরা বেগমের বিল্ডিং এ প্রবেশ করলে মিনরা বেগম দেখে ফেললে প্রেমিক-প্রেমিকা উভয়ে প্রথমে মুখ চেপে ধরে এবং ভিকটিমের ওড়না দিয়ে মুখে প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। প্রেমিক অন্তর চন্দ্র দাস পকেট থেকে ছুড়ি বের করে জবাই করে ও হাত পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে সাইফা রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে এবং অন্তর দাস পালিয়ে যায়।
ওসি আরো জানান, প্রেমিকা সাইফা আক্তার এবার এসএসসি পরিক্ষা দিয়ে এক বিষয় ফেল করে এবং স্কুলে আসা-যাওয়ার পথেই অন্তর দাসের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠ।