শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররম বীর বিক্রম স্মরণে তার জন্মস্থান উপজেলার মলামারী গ্রামে স্মরণসভা ও মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ১১ ডিসেম্বর (রবিবার) বীর বিক্রম ‘শহীদ খুররম স্মৃতিস্তম্ভে’ পুষ্পস্তবক অর্পণ দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, কমান্ডার কাকিলাকুরা ইউনিট। শুরুতেই শহীদ বীর বিক্রম শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররম সহ সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররমের ছোটভাই ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিরোধ গড়ে তোলা তুখোর ছাত্রনেতা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কানাডা প্রবাসী শাহ মোস্তাইন বিল্লাহ এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী আফিসার (ইউএনও) ইফতেখার ইউনুস, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত সভাপতি মোতাহারুল ইসলাম লিটন, জামালপুর মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘরের পরিচালক কানাডা প্রবাসী উৎপল কান্তি ধর, শেরপুর মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘর নেটওয়ার্ক কমিটির সভাপতি রাজেয়া সামাদ ডালিয়া, শহীদ খুররমের চাচাতো ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেহ প্রমূখ।
এ সময় তারসহযোদ্ধা এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাগণ ও সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন। সহযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ভোরে জামালপুর শহরকে পাকহানাদার মুক্ত করার শেষ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে শহরের বেলটিয়ায় সম্মুখ যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। শত্রু সেনার মর্টারের গুলিতে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় তাঁর দেহ। বুকের তাজা রক্তে এই বীর এঁকে দিলেন বাংলাদেশের মানচিত্র, উড়িয়ে গেলেন স্বাধীনতার পতাকা। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে সহযোদ্ধারা পাঠিয়ে দেন তাঁর গ্রামের বাড়িতে। সেখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়।
তাঁর অসাধারণ দেশপ্রেম, অসীম সাহসিকতা ও মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করে।বৃহত্তর ময়মনসিংহের শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সর্বোচ্চ খেতাব প্রাপ্ত একমাত্র বীর বিক্রম (মরনোত্তর) শহীদ শাহ মু’তাসিম বিল্লাহ খুররম। বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্তদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্টতম বীর বিক্রম। শাহাদাৎ বরণকালে তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর ৫ মাস।