প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশের মানুষ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ) বাংলাদেশ অফিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন-জিসিএ বাংলাদেশ অফিস ভার্চুয়ালি যৌথভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও জিসিএ বোর্ডের চেয়ারম্যান বান কি মুন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, নেপাল ও মালদ্বীপের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা বক্তব্য রাখেন।শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক ব্যাপার। প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানগুলো বাড়ানোর আহ্বান জানাই।
সঙ্কট মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির ধাক্কা বিভিন্ন দেশের মধ্যে বৃহত্তর সাহায্য ও সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছে। চলমান এ সঙ্কট বা ভবিষ্যতে একই রকম সঙ্কটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একে অন্যকে ছেড়ে যাওয়া উচিত নয়। আমরা একসঙ্গে কাজ করবো, একসঙ্গে লড়বো এবং একসঙ্গে বিজয়ী হবো।
ঢাকায় জিসিএ’র নতুন অফিস উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু অভিযোজন ব্যবস্থায় জিসিএ’র ঢাকা অফিস ‘সেন্টার অব একসিলেন্স’ এবং একটি সমাধান মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, অভিযোজনের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্কট মোকাবিলার লড়াইয়ে এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দক্ষিণ এশিয়ায় অভিযোজন ও ক্লাইমেট রেজিলেন্স বাড়াতে জিসিএ বাংলাদেশ অফিস সব ধরনের সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুজনিত সাইক্লোন, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা, ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এ অঞ্চল। এমনকি মাত্র দেড় ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। জলবায়ুজনিত দুর্যোগে নারী-শিশু, বৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো আরও বেশি ঝুঁকির কথা স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং অন্যান্য পরিবেশগত ক্ষতি ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা এবং প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন চায় বাংলাদেশ। ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশ জিডিপির ১ শতাংশ বা ২ বিলিয়ন সমপরিমাণ অর্থ অভিযোজনের উদ্দেশ্যে খরচ করে আসছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া নিজস্ব সম্পদে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে ৪৩০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নসহ জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন তিনি।