নারায়নগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরনের ঘটনায় স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল নয়নের। লালমনিহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের তালুক পলাশী এলাকার দিনমজুর মেহের আলীর বড় ছেলে মো. শুকুর আলী নয়ন (২৭)। জায়গাজমি ঘরবাড়ি কিছুই নেই । মা-বাবা ও ছোট দুই ভাই এক বোনকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে এসে একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। বেতনের কষ্টার্জিত সঞ্চয়ে নিজের গ্রামে জায়গা কিনে বাড়ি করে মা-বাবা ভাইদের এলাকা পাঠিয়েছেন। বোনকে ও বিয়ে দিয়েছে কিছুদিন কাজ করে আরেকটু সঞ্চয় হলে এলাকায় ফিরে বিয়ে করে গ্রামের বাড়িতে থাকার ইচ্ছা ছিল। তার ইচ্ছাটা পুরন হল না কারন গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের মসজিদে এসি বিস্ফোরিত হওয়ার ঘটনায় আহত হয়ে চলে গেল পরপারে।। বাড়িতে ফিরে গেল নয়ন লাশ হয়ে।
নয়নের বন্ধু শামীম বলেন শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় আমাদের গার্মেন্টস ছুটি হয়। নয়ন বাসায় ফিরে নামাজ পড়তে মসজিদে এসেছিল। নামাজ পড়ে সে ফিরলে আমাদের একসাথে রাতের খাবার খাওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ শুনলাম বিস্ফোরণ, মসজিদে আগুন লাগছে। গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য। আমরা ওই মসজিদের মেসেই থাকি। তাকে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে অবাক হই, ভয় পেয়ে যাই। ওখানে না পেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসি। সেখানে ওর লাশ ও মোবাইলটি পাই। এরপর ওর বাড়িতে কথা হয়। ওর ভগ্নিপতি ও মা শনিবার সকাল ৬টায় ঢাকায় পৌঁছালে লাশ বুঝে পান। এরপর আমরা ১৫ হাজার টাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে লাশ নিয়ে রওনা দিয়েছি। কিন্তু লাশবাহী গাড়ির টাকাও আমাদের হাতে নেই সহযোগিতা করবেন কে ।
নয়নের বাবা মেহের আলী, দুই ছেলে ও মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে পুরো এলাকা নিস্তব্ধ হয়ে যায়। মসজিদের বিস্ফোরনের ঘটনায় ইমাম মোজ্জিন, বাবা ছেলেসহ চলে গেল ২৪টি তাজা প্রাণ।