কুমিল্লায় র্যাব-১১ এর সিপিসি-২ এর বিশেষ অভিযানে বিএইচবি নামের একটি অপহরণ চক্রের ৬ সদস্যকে
গ্রেফতার করে। এ সময় অপহৃত ভিকটিমসহ বিপুল পরিমান
দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম সহাসড়কে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর অপহরণ,ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। উক্ত অপহরণ, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে এলাকার সাধারণ জনগণ ও মহাসড়কে চলাচলরত যাত্রীদের মধ্যে ব্যপক
আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। অপহরণ, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনাগুলো স্থানীয় গণমাধ্যমসহ দেশের শীর্ষস্থায়ী গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সংগঠিত হওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে র্যাব ঘটনা সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা শুরু করে। এছাড়াও একাধিক ভক্তভোগীদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে একাধিক আসামি আসামীদের গ্রেফতারের জন্য আবেদন পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম সহাসড়কে অপহরণ, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি চৌকস গোয়েন্দা দল গোপনে ঢাকা-চট্টগ্রাম সহাসড়কে প্রবণ এলাকায় কঠোর নজরদারি শুরু করে।
এরই মধ্যে গত ০২-০৫-২০২২ইং তারিখ দুপুরে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা অফিসে এসে মোসাঃ রিনা আক্তার (২৫), স্বামী-মোঃ ইমাম হোসেন, পিতা-মোঃ জাফর, সাং-নতুন পাড়া, থানা-ভূজপুর, জেলা-চট্টগ্রাম তার স্বামীকে কে বা কাহারা অপহরন করে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করছেন এই মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের প্রাপ্তির পর র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা তৎপরতা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে ০৩ জুন ২০২২ইং তারিখ রাতে ঢাকা জেলার ডিএমপি, ডেমরা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অপহরন চক্রের মূল হোতা জিসানসহ ছয় সদস্য’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার উল্টর নছরুদ্দি গ্রামের মৃত শাহ আলম এর ছেলে মোঃ জিসান আহমেদ(৩২); ২। খুলনা জেলার চালনা থানার কামার খোলা দাকোপ গ্রামের মোঃ মনিরুল ইসলাম গাজীর ছেলে মোঃ ইসমাইল গাজী(২৫), পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানার পশ্চিম পশারী বুনিয়া গ্রামের মোঃ জাকির হোসেন এর ছেলে মোঃ জায়েদ আল শাহান(২১) খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার গদাইপুর গ্রামের মোঃ ছবুর গাজীর ছেলে মোঃ এখলাছুর রহমান ফাহিম(১৯); ৫। সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর থানার দীঘিরপাড় গ্রামের মোঃ মারাফত
আলীর ছেলে মোঃ আবির হোসেন(২১) এবং ৬। ঢাকা জেলার ডেমরা থানার ডেমরা গ্রামের হাজী আঃ সালাম এর ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান(৩৪)। একই তারিখে আটককৃত আসামীদের নিকট জিম্মি থাকা অবস্থায় অপহৃত ভিকটিম মোঃ ইমাম হোসেন(২৭)’কে উদ্বার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের নিকট থেকে নিম্মোক্ত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়ঃ ০৪টি সুইচ গিয়ার চাকু, ০২টি ধারালো চাকু, কচটেপ এবং ০১টি কাঠেরবক্স যার মধ্যে অসংখ্য দাতব্য যন্ত্রপাতি রয়েছে। ভিকটিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় গত ০২-০৬-২০২২ইং তারিখ সন্ধা আনুমানিক ২১:০০ ঘটিকার সময় চাকুরীর কাজে যোগদানের জন্য কুমিল্লা হতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করার জন্য হোটেল নুর জাহানের সামনে
গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করলে ভিকটিমের একই গ্রামের দূর সম্পর্কের আত্মীয় মোঃ জাফর আহমেদ(২১), পিতা-আলী আহমদ, সাং-কালাপানি স্কুল পাড়া, থানা- মানিকচড়ি, জেলা-খাগড়াচড়ি এর সাথে দেখা হয়। জাফরও ঢাকা যাবে বিধায় ভিকটিম তার সাথে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে নুরজাহান হোটেলের সামনে গাড়ীর জন্য অপেক্ষ করতে থাকে।
অপেক্ষার একপর্যায়ে একটি কালো হাইচ গাড়ী হোটেল
নুরজাহানের সামনে এসে দাড়ায় এবং হাইচে থাকা একব্যক্তি বলে আমরা ঢাকায় যা”িছ কম টাকায় ঢাকা যেতে হলে গাড়িতে আসতে পারেন। তখন ভিকটিমরা ঢাকা যাওয়ার জন্য হাইচে উঠে। গাড়ীতে উঠার একপর্যায়ে কোর্টবাড়ী বিশ^রোড পার হওয়ার পর আসামীরা ভিকটিমদের চাকু দিয়ে আঘাত করার ভয় দেখিয়ে তাদের হাত পাঁ বেধে ফেলে ভিকটিমদের সাথে থাকা মোবাইল এবং টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে
তাদের পরিবারের কাছে ফোন করে ভিকটিমদের হত্যার হুমকি দিয়ে দুই লক্ষ টাকা করে মুক্তিপন দাবী করে। পবর্তীতে রাত গভীর হলে আসামীরা ভিকটিদের নিয়ে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে নামলে ভিকটিম মোঃ জাফর(২১) কৌশলে
পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামীরা অপর ভিকটিম ইমাম হোসেন’কে নিয়ে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যায় এবং অপহরনকারীরা ভিকটিমকে অমানবিক নির্যাতন করে মুক্তিপনের টাকার জন্য ভিকটিমের পরিবারকে চাপ দিতে থাকে। টাকা উত্তোলন করে ব্যাংক থেকে বের হয়ে গেলে কোন রাস্তার কোথায় প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে তার নিকট রক্ষিত টাকা ছিনতাই করবে, এমনকি ছিনতাইয়ের পরে কোন লোকেশনে গিয়ে তারা গা ডাকা দিব এ সম তথ্য
তারা এড়ড়মষব ম্যাপে স্ক্রীনশট দিয়ে রেখেছে। এছাড়াও আসামীরা ক্রমানয়ে বড় বড় মিশন পরিকল্পনার বিষয়টিও স্বীকার করেছে।
উক্ত বিষয়ে ৬ জনকে এজাহার নামীয় মোকতাদির(২৫) মাকসুদ(২২); ৩। মোঃ ইলিয়াস(২৪)’কে পলাতক আসামী করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করো হয়।