দেশে ধর্মীয় সম্প্রতি সুসংহত করতে ও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা মোকাবিলায় মসজিদের খতিব, ইমাম ও ওলামায়ে কেরামদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, দেশে ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করে কেউ যেন কোনোভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে। এবিষয় ধর্মীয় ও সামাজিক নেতা হিসেবে ইমাম ও খতিবদের সজাগ ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
বুধবার (৯ মার্চ) জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ইসলামিক ফাউণ্ডেশন (ইসলামপুর) আয়োজিত ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং সামাজিক সমস্যা নিরসন’ শীর্ষক মতবিনিমিয় সভা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির অর্থায়নে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমাজে খতিব, ইমাম ও ওলামায়ে কেরামের অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে সরকার তাদের দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যক্রমে যুক্ত করছে।
তিনি বলেন, মহানবী (সা.) মদিনাবাসীর বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর যৌথ সম্মতিতে সম্পাদিত চুক্তি তথা মদিনা সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্র পরিচালনা করে পৃথিবীতে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের আদর্শ স্থাপন করে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে ত্রিশ হাজার শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। পবিত্র সংবিধান দেশের সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ ধর্মের নামে রাজনীতি করলেও আওয়ামী লীগ সরকারই এদেশে ইসলামের খেদমতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। ইসলামের সঠিক আদর্শ ও শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে জাতির পিতাই এদেশে ইসলামিক ফাউণ্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বিশ্ব এজতেমার জন্য তুরাগ তীরে জায়গা বরাদ্দ দেওয়াসহ ইসলামের খেদমত ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ ও নীতি অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামের খেদমতে এরই মধ্যে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছেন। ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠাসহ লাখ লাখ আলেমের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
ফরিদুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। সমাজের অসচ্ছল ও নিম্ন আয়ের মানুষদের বিভিন্ন ভাতার আওতায় এনে সরকার বহুবিধ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তানভীর হাসান রুমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এসএম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন জামালপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আকন্দ, এম এ ছামাদ পারভেজ মেমোরিয়াল মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জামাল আব্দুন নাছের চার্লেস চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ইসলামপুর উপজেলা শাখার সাবেক সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান শাহজাহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন স্বাধীন প্রমুখ।