কুমিল্লা নাঙ্গলকোর্ট চান্দলা গ্রামে জবা বেগম ক্লুলেস হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেফতার করে র্যাব ১১ সিপিসি ২ এর সদস্যরা।
র্যাব সুত্র জানায়, গত ২৬ অক্টোবর সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টায় কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানাধীন ঢালুয়া ইউনিয়নের চান্দলা এলাকায় ভিকটিমের ছোট ছেলের স্ত্রী স্বপ্না বেগম তার শাশুড়ী জবা বেগম (৭৫) কে তার নিজ ঘরে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন নাঙ্গলকোট থানায় খবর দিলে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ সুরতহালের জন্য থানায় নিয়ে যায়। উক্ত বিষয়ে কুমিল্লা নাঙ্গলকোট থানায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। মামলা নং-১২/১৯৩,২৭ অক্টোবর, ধারা-৪৫৭/৩৮০/৩০২/৩৪ ধারায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়।
উক্ত ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গনমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার নজরে আসলে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব। হত্যা কান্ডের রহস্য উৎঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার একটি চৌকস টিম ৩১ অক্টোবর সকালে অভিযান পরিচালনা করে কুমিল্লা নাঙ্গলকোট থানার সিজিয়ারা গ্রাম থেকে খোরশেদ আলম (২৫), পিতা- মৃত.আব্দুল গফুর, সাং- সিজিয়ারা, থানা- নাঙ্গলকোট, জেলা- কুমিল্লাকে গ্রেফতার করে। বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে খোরশেদ আলম (২৫) জানায় যে, সে ভিকটিমকে নানী বলে সম্বোধন করত। ঘটনার দিন বিকালে ভিকটিম আসামী মোঃ খোরশেদ আলম (২৫) কে নারিকেল বিক্রির জন্য প্রস্তাব দিলে আসামী ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে নারিকেল দেখে তাকে প্রতিটি নারিকেল ৩০ (ত্রিশ) টাকা করে দিবে বলে জানালেও ভিকটিম প্রতিটি নারিকেল ৪০ (চল্লিশ) টাকা করে চাহিদা দেয়। তখন ভিকটিমের ঘরের ভিতর বিভিন্ন দামী আসবাবপত্র ও লকার দেখে তার ভিতর লোভের সৃষ্টি হয় এবং সে পুনরায় এসে নারিকেলের দরদাম করে এবং কৌশলে তার ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র সমূহ পর্যবেক্ষণ করে চলে যায়। পুনরায় তৃতীয় বার ভিকটিমের ঘরে আসে এবং ভিকটিম নারিকেল যে দামে বিক্রি করতে চেয়েছিল সেই দামে নারিকেল ক্রয় করিতে হত্যাকারী রাজী হয় এবং কৌশলে ভিকটিমের অজান্তে বসত ঘরের পূর্ব পার্শ্বের উত্তরের দরজা খুলে চলে যায়। পরবতীতে ভিকটিম ঘুমিয়ে পরলে আসামীর পরিকল্পনা মোতাবেক রাত আনুমানিক ২৩:৫০ ঘটিকার সময় পূনরায় আসামী ভিকটিমের বাড়িতে আসে এবং ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে। আসামী ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে ঘরের ভিতর রক্ষিত আলমারি,আসবাবপত্র খোজাখুজি করে আলমারিতে রাখা নগদ মাত্র ২৫০০/- (দুই হাজার পাঁচশত) টাকা পায়,কিন্তু আসামির ধারনা ছিল সে অনেক টাকা স্বর্নালংকার পাবে কারন ভিকটিমের চার ছেলে প্রবাসী, অন্য ছেলে দেশে ভালো চাকুরি করে,ইতোমধ্যে ভিকটিম ঘরের মধ্যে আসামীর উপস্তিথি টেরপায় তখন আসামীর পালিয়ে যাবার সুযোগ থাকলেও আসামীর আশানারুপ মালমাল না পাওযায় বৃদ্ধ মহিলাকে চাকু দ্বারা গলায় পোচ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যান্ত ভিকটিমের ঘরে অবস্থান করে । পরবর্তীতে আসামী আলমারিতে রাখা নগদ মাত্র ২৫০০/- (দুই হাজার পাঁচশত) টাকা, ভিকটিমের ব্যবহৃত ০২টি মোবাইল ভিকটিমের হাতে থাকা স্বর্নের আংটি, নাকফুল ও কানের দুল খুলে নিয়ে ভিকটিমের ঘর থেকে চলে যায় এবং যাবার সময় প্রচলিত পথ ব্যবহার না করে রেললাইনের পথ ধরে আসামী তার নিজ বাড়িতে গমন করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশানুরুপ টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার না পাওয়ায় ও চুরির সময় ভিকটিম তার উপস্থিতি বুঝতে পারায় সে নিজেই উক্ত হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে।
গ্রেফতার আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৩১অক্টোন্বর তার বাসা থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু, চোরাইকৃত স্বর্ন অলংকার, মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।