আমি
আমার আমিত্বকে নিয়ে কখনো করিনি বড়াই!
আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমি পার করে বহু চড়াই উতরাই!
মাঝে মাঝে অভিমানী হয়ে কতো কিছু যাই বলে,
কখনো নীরবে,নিভৃতে কেঁদে যাই লোকচক্ষুর আড়ালে!
আমি, আমার আমিত্ব ভীষণ সাধারণ,
ধরার যেকোনো সৃষ্টিকে সহজেই করে নিতে পারি বরণ।
রক্ত,ধর্ম,শ্রেণি,বর্ণ সবার উপরে মানবতাকে দিয়েছি সব সময় ঠাঁই,
সৃষ্টির সেবার মাঝেই আনন্দ খুঁজে আমি পাই!
গ্রীষ্ম আমার মনে ভিন্ন কোনো অনুভূতি আনে না!
বর্ষায় আমার মন কখনো ভীষণভাবে আন্দোলিত হয়না!
শরতেও আমি কখনো ছুটে যাইনি ওই কাশবনের পানে!
হেমন্তে উচ্ছসিত আকাশও আমাকে কখনো টানেনি কাছে!
শীতের কুয়াশার ভোরেও আমি হইনি কখনো কাবু,
বসন্তের কোকিলও কখনো আমাকে করেনি সুরের জাদু!
আমার আমিত্বকে খুঁজে পাই দুঃখিনী মায়ের নীরব অশ্রুতে,
কখনোবা খুঁজে পাই হত দরিদ্র নিঃসম্বল মানুষের করুন চাহনীতে,
মাঝে মাঝে খুঁজে পাই বাবা মা হারা অসহায় শিশুর দৃষ্টিতে,
আবার কখনো খুঁজে পাই অসহায় শ্রেণির এক মুঠো খাবার যোগানের আনন্দের হাসিতে!
কখনো খুঁজে পাই পীড়িতের যন্ত্রণাময় দেহে,
কখনোবা খুঁজে পাই অপরের উৎফুল্ল হৃদয়ে!
না হতে পারি আমি বাবা মায়ের আদরের নয়ন মনি,
নাইবা হতে পারলাম বোনের আদরের দুলালী,
হয়তোবা হতে পারিনি স্বামীর আস্থাভাজন অর্ধাঙ্গিনী,
হতে পারবোনা জানি কখনো সন্তানের যোগ্য জননী।
হয়তো আমি ভীষণ বাজে ভদ্র সমাজের দৃষ্টিতে,
শত সহস্র মন্দের ভালো আমি আমার স্রষ্টার সৃষ্টিতে!
মানুষের ঘরে জন্ম নিয়েছি, মানুষের তরে বাঁচতে চাই,
বিনিময়ে পাই যত ধিক্কার, ঘৃণা,তা নিয়েই হাসতে চাই!
হোঁচট খেয়ে যদি প্রতিবার নতুন কিছু শেখা যায়,
হোঁচটের আঘাত ভুলে যাওয়াই তখন মানুষের শোভা পায়।
পড়েছি যত প্রবাদ, বচন !সে কি করে হবে ভুল!
এইটুকু সান্ত্বনায় নিজেকে বুঝিয়ে বেঁচে থাকার হোক শত কুল!