টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। বুধবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ থানায় মামলাটি রজু করা হয়। মামলা নম্বর সিআর: ৯৪/২০২০ইং/টেকনাফ। আদালতের নির্দেশে মামলাটি থানায় নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার বর্তমান ওসি এসবি দোহার সঙ্গে অসংখ্যবার যোগাযোগেও চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, ‘পরোয়ানা জারি করার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র আদালতের। মামলাটি আদালত টেকনাফ থানাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে বলেছেন, গ্রেফতার করতে বলা হয়নি। যেহেতু মামলার ধারাগুলো জামিন অযোগ্য, সেহেতু তদন্ত কর্মকর্তারা চাইলে তদন্তের স্বার্থে আসামিদের যেকোনও সময় গ্রেফতার করতে পারেন। এটিকে গ্রেফতারি পরোয়ানা বলা যাবে না।’
একই কথা বলেছেন কক্সবাজারের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম। তিনি বলেছেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তাদের যদি সন্দেহ হয় যে আসামিরা পালিয়ে যেতে পারেন বা তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন, তাহলেই আসামিদের গ্রেফতার করা যাবে। এর আগে নয়।’
টেকনাফ থানার এক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অবসর নেওয়া মেজর সিনহা রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় কক্সবাজার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের করা মামলা আদালতের নির্দেশে টেকনাফ থানায় মামলাটি রুজু করে। দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলায় ওসি প্রদীপ ছাড়াও বাকি আসামিরা হলেন- বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে প্রত্যাহারকৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এসআই টুটুল, কনস্টেবল মোস্তফা। তাদের মধ্যে ওসি প্রদীপ অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আগেভাগে ছুটি নিয়ে আত্মগোপনে গেলেও বাকিরা পুলিশ লাইনেই রয়েছে।
বুধবার (৫ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটির শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে তা ‘ট্রিট ফর এফায়ার’ হিসেবে আমলে নিতে টেকনাফ থানাকে আদেশ দেন আদালতের বিচারক। এছাড়া মামলার অগ্রগতির প্রতিবেদন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কক্সবাজার র্যাব-১৫ কে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৩১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন ও নিরাপত্তা বিভাগ। একইভাবে তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ১৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।