ময়মনসিংহের নান্দাইলে ধানক্ষেতে পাওয়া লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। টাকা ধার না দেওয়ায় ফজলুল হককে (৭৩) কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ ধানক্ষেতে ফেলে রেখে যায় ভাড়াটিয়া।হত্যাকান্ডের ঘটনায় আবুল হাসান (৩৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করার কথা জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
নিহত ফজলুল হক নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার তেলিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তিনি নরসিংদী সদরের খাটেহারা পূর্বপাড়ায় নিজ বাসায় বসবাস করতেন।
গ্রেফতার আবুল হাসান জেলার নান্দাইল উপজেলার কালিয়াপাড়া এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। তিনি নিহত ফজলুল হকের বাসায় স্বপরিবারে ভাড়া থেকে একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করতেন। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার সময় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় পিবিআই।
এর আগে ওই দিন সকাল ১০টায় আবুল হাসানকে নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলার ফুলতলা গ্রামের চাঁন মিয়ার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিহত ফজলুল হক তার স্ত্রী সন্তানসহ শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন। ৭-৮ বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে নরসিংদী সদরের খাটেহারা পূর্বপাড়া নিজ বাসাতেই বসবাস করতেন। প্রায় দেড় বছর আগে আবুল হাসান স্ত্রীকে নিয়ে ফজলুল হকের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেন।
ভাড়া থাকার সুবাদে ফজলুল হকের সঙ্গে আবুল হাসানের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এমতাবস্তায় আবুল হাসান স্ত্রীর সিজার করার জন্য টাকার প্রয়োজন হলে বাসার মালিক ফজলুল হকের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা ধার নেয়। তখন থেকেই আবুল হোসেন ধারণা করেন, ফজলুল হকের কাছে আরও নগদ টাকা থাকতে পারে। এই ধারণা থেকে আবুল হাসান আবারও টাকা ধার চাইলে ফজলুল হক টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে আবুল হাসান ফজলুল হকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় এবং পুরো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে বাড়ির মালিক ফজলুল হককে চলতি মাসের ২৩ সেপ্টেম্বর আবুলহাসান তার নিজ বাড়ি নান্দাইলে বেড়ানোর জন্য রওনা দেয়। পথে মোয়াজ্জেমপুর ইউপির কামালপুর গ্রামের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌছামাত্রই আবুল হাসান ধারালো দা দিয়ে ফজজুল হককে পেছন থেকে ঘাড়ে কোপ মারে।
সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ফজলুল হক। একপর্যায়ে পাশের ধানক্ষেতে ফজলুল হককে ফেলে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর ফজলুল হকের সঙ্গে থাকা ৩০ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল নিয়ে আবুল হাসান ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পিবিআই পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস নাগরিক খবরকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি-না জানতে আসামি আবুল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নান্দাইলের মোয়াজ্জেমপুর ইউপির কামালপুর গ্রাম থেকে ফজলুল হকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় (২৮ সেপ্টেম্বর) মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের চৌকিদার মজিবুর রহমান বাদী হয়ে নান্দাইল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।