গতকাল রোববার আবেদনটির শুনানি শুরু হলে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। তিনি বলেন, বিটিআরসির কাছে কোনো আবেদন না করেই জনস্বার্থে এ রিট আবেদনটি করা হয়েছে। তাছাড়া আরেকটি বেঞ্চ থেকে একই ধরনের আদেশ হয়েছে, রুল জারি হয়েছে। তখন বেঞ্চের সিনিয়র বিচারক মো. মজিবুর রহমান মিয়া বলেন, বিটিআরসি কী করে? তাদেরকে প্রতিনিয়ত নির্দেশনা দিয়ে এগুলো বন্ধ করতে হবে? সমাজটা উচ্ছন্নে যাচ্ছে!
রাসেল চৌধুরী বলেন, অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো কোনো ধরনের গাইডলাইন ফলো করছে না। তাদের কোনো অনুমতিরও দরকার নাই অনেক সময়। যে কারণে অনুমতি ও গাইডলাইন ফলো করার জন্য একটি রুল ইস্যু হয়েছে। তখন সিনিয়র বিচারক বলেন, বিটিআরসি এগুলো (ভাইরাল ভিডিও, ছবি) সংরক্ষণ করে নাকি? প্লেজার ফিল করে? দেখতে তাদের ভালো লাগে? তারা এসব উপভোগ করে? আমরা সন্তান-সন্ততি নিয়ে থাকি না? আমাদের একটি পরিবার আছে না? টোটাল সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়, কেন?
বেঞ্চের জুনিয়র বিচারক মো. কামরুল হোসেন মোল্লা এসময় বলেন, সাথে সাথেই উনারা (বিটিআরসি কর্তা ব্যক্তিরা) স্টপ করে দিতে পারে।
সিনিয়র বিচারক মজিবুর রহমান মিয়া বলেন, বিটিআরসি বসে বসে কী করে? আর আপানারা (আইনজীবীরা) সবাই আসেন আমাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি করার জন্য। চান বিটিআরসিকে একটা ডিরেকশন দেই, কেন দিব আমরা? আমরা তো আল জাজিরার মামলায় বলেছি, সমস্ত ক্ষমতা বিটিআরসির আছে এগুলো বন্ধ করার জন্য। তারপরেও একটা একটা (রিট আবেদন) করে নিয়ে আসা হচ্ছে আমাদের কাছে। আমরা বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে ডাকি তাহলে, ফিজিক্যালি অ্যাপিয়ার হোক, বলি যে কেন এগুলো (বন্ধ বা অপসারণ না করা) করছেন? আপনি ওখানে কী জন্য বসে আছেন। তাদের শক্ত হাত আছে এগুলো মেইনটেইন করার। তাও তারা করে না। হাই কোর্টের নির্দেশনা না হলে পরে এগুলা কেউ কোনো পাত্তা দেয় না।
রাসেল চৌধুরী বলেন, প্রতিটা ঘটনার জন্য তো আলাদা আলাদা আদেশের প্রয়োজন নেই। সবকিছু মিলিয়ে একটি রায় হলেই হয়।
সিনিয়র বিচারক বলেন, কোনো প্রয়োজন নাই। আমরা যে ছয়জন অ্যামিকাস কিউরিয়া এনেছিলাম, কামাল উল আলম (আইনজীবী) কোথায় কী অছে না আছে (আইনে) বিস্তারিত আমাদের দেখিয়েছেন। এরপরও বিটিআরসি ঘুমাচ্ছে।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ করে বেঞ্চের জুনিয়র বিচারক বলেন, বিটিআরসির এমনিতেই ক্ষমতা আছে। আমরা সুনির্দিষ্ট করে করে তাদের নীতিমালা করে দিয়েছি। তারপরও কি আমরা তাদের প্রত্যেকদিন ইনস্ট্রাকশন দিব?
এরপর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া রিট আবেদনকারী আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদের কাছে জানতে চান আবেদনটি করার আগে তাদের (মোসারাত জাহান মুনিয়া,সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও পরীমনীর) ব্যক্তিগত বা গোপন ভিডিও, ছবি, প্রতিবেদন অপসারণ করতে বিটিআরসিকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল কি না? জবাবে এ আইনজীবী ‘না’ বলেন। এরপর রিট আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী বলেন, মোসারাত জাহান মুনিয়া,সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও পরীমনির ব্যক্তিগত বা গোপন ভিডিও, ছবি, প্রতিবেদন অপসারণে বিটিআরসিকে অইনি নোটিস পাঠাব। নোটিস পাঠানোর পরও যদি বিটিআরসি কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তবে আবার তিনি রিট আবেদনটি করবেন বলে জানান।