র্যাব-১১ এর সিপিসি-২ এর অভিযানে চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থেকে মানব পাচারকারীদের অর্থের যোগানদাতা লিটনকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ০৪/৮/২১ ইং তারিখে মোছাঃ পারুল বেগম, স্বামী- ফারুক খান, সাং- গোহাইল বাড়ি, থানা- আশুলিয়া, জেলা- ঢাকা একটি লিখিত অভিযোগ র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা বরাবর প্রদান করেন। অভিযোগে জানান যে, তার আপন ভাই মোঃ জনি (২৮) গত দেড় বছর যাবত ওমান কর্মরত। ওমানে থাকা অবস্থায় ওমান প্রবাসি (বাংলাদেশি) মোঃ তাহের মিয়া @ তুষার তার ভাইকে উন্নত
জীবন যাপনের প্রলোভন দেখিয়ে তুরস্কে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সেখান থেকে তার ভাই তুষার এর মাধ্যমে তুরস্কে যাবার কথা বলে তুরস্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। কিছু দিন পরে অজ্ঞাত ব্যাক্তি তার ভাইকে আটকে রেখে মারধর করে তার কাছে ভিডিও কল দেয়। তাদের নিকট ৭ লাখ টাকা দাবি করে, না দিলে তার ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। অজ্ঞাত ব্যক্তিরা টাকা দেওয়ার জন্য তার নিকট একটি ব্যাংক একাউন্ট ও একটি বিকাশ নাম্বার দেয়। ভাইকে বাঁচাতে তাদের কথা মতো বিকাশে ২৫ হাজার টাকা এবং ব্যাংক একাউন্টে ৬০
হাজার টাকা ট্রান্সফার করে। তারা আরো টাকার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করে এবং অবশিষ্ট টাকার জন্য তার ভাইকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। খোঁজ নিয়ে বাদী জানতে পারে যে, ব্যাংক একাউন্টটি চাঁদপুরের, এ জন্য কুমিল্লা র্যাব অফিসে অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগ এর ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা অভিযোগকারীর দেওয়া ব্যাংক একাউন্ট এর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে এবং ব্যাংক একাউন্ট থেকে নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে অদ্য ০৭/৮/২০২১ ইং তারিখে ব্যাংক একাউন্টের মালিক মোঃ লিটন, পিতা- আজমত উল্লাহ, সাং- বেলুতি, থানা-মতলব দক্ষিণ, জেলা- চাঁদপুর কে আটক করে।
আটক লিটন ওমান প্রবাসী। সে গত ২৬/০৬/২০২১ ইং তারিখে বাংলাদেশে ছুটিতে এসেছে এবং পুনরায় ২৫/৮/২০২১ ইং তারিখে চলে যাবে। ওমানে সে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কাজ করে এবং এই চক্রের টাকা আদান প্রদানের সাথে সে জড়িত। আটক লিটনের দেওয়া তথ্যমতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা জানতে পারে যে, ভিকটিম ওমানে থাকা অবস্থায় মোঃ তাহের মিয়া @ তুষার নামের এক দালালের পরিচয় হয়, তুষার ভিকটিম
কে প্রথমে ইরানে পাঠায়। ইরানে সুমন নামে অন্য একজন দালাল ভিকটিম জনি কে রিসিভ করে। ইরান থেকে দালাল সুমন কর্তৃক তুরস্কে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। দালাল সুমন ভিকটিমকে তুরস্কে প্রেরন করলে তুরস্কের দালাল সাইফুল এবং রানা ভিকটিমকে রিসিভ করে। এভাবে ওমান থেকে তুরস্কে পাঠানো হয়। উক্ত সংঘবদ্ধ চক্রটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী বাংলাদেশীদের উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে ইউরোপসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রেরণ করে এবং মাঝখানে তাদের জিম্মি/আটক করে মারধর করে তাদের পরিবারের নিকট থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।
র্যাব ১১ সিপিসি ২ এর অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। মানব পাচারকারী ও তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।