মিরপুর বাউনিয়াবাঁধ এলাকার আল ইসলামকে ঘিরে গুঞ্জন নিত্য দিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়াতে বেশ অবাক স্থানীয় বাসিন্দারা। জানা যায়, দশ/বারো বছর আগে আল ইসলাম ও তার ভাই জাহাঙ্গীর ভাঙ্গারী কেনা বেচা করতো। টাকার লোভে রাতারাতি কোটিপতি হতে দুই ভাই যুক্ত হয় মাদক ব্যবসার সাথে। নগদ অর্থ বেশি আয় হওয়ায় বন্ধ করে দেয় তাদের পুরনো ভাঙ্গারীর ব্যবসা। দুই ভাইসহ পরিবারের সবাই নামেন মাদক ব্যবসায়। টাকার লোভে মাদকসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে তারা। প্রশাসনের নাকের ডগায় তারা ব্যবসা পরিচালনা করতো ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে। জানা যায়, গত বছর র্যাবের জালে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আটকা পড়ে আল ইসলামের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীরের অবর্তমানে আল ইসলাম একক মাদক সম্রাট হিসেবে নেমে পড়ে ব্যবসায়।
মাদক ব্যবসা নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আল ইসলাম গড়ে তোলে কয়েক শতাধিকের এক বিশাল বাহিনী। বিশাল এ বাহিনীর পরিচালনার জন্য চোর স্বপন, জামির, পাতা সোহেল, শাও, রাজীবসহ বেশ ক’জনের দায়িত্ব ভাগ করে নিজে আড়াল হয়ে থাকেন। অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় ভাটা পড়লে সংঘাতের সৃষ্টি হয় তাদের মাঝে। এ নিয়ে একাধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা যায়। গত বছর মাদক ব্যবসাকে নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আল ইসলাম তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সশস্ত্র হামলা চালায় অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদের উপরে। ওই হামলায় গোলাগুলি হবার কারণে স্থানীয় পল্লবী থানায় মামলা হয়েছিল। যার মামলা নং – ১২, তারিখ – ৩/১২/১৯। সেই মামলার সব আসামীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে কিন্তু যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছিল সেই অস্ত্র আর উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ওই মামলায় আল ইসলামকে ঢাকার বাইরের একটা জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গোপন সুত্রে জানা যায়, ওই মামলা থেকে আল ইসলাম নিজের নাম বাদ দিতে অনেকবার থানার বড় এক কর্মকর্তার সাথে বেশ কয়েকবার গোপন বৈঠক করেছে।
এলাকাবাসী বলেন, আল ইসলাস বাহিনীর নেতেৃত্বে থাকা চোরা স্বপন, জামির, পাতা সোহেল,রাজীব ও শাও চিহ্নিত মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাউনিয়াবাঁধের এক বাসিন্দা বলেন আল ইসলামের কিছু হলেই পুলিশের কামাল নামের এক বড় অফিসারের হুমকি দেয়। আল ইসলামের ব্যবসায় মিরপুরের বিভিন্ন এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা জড়িত রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে শাহ আলী এলাকার নিউ সি-ব্লকের ফতে, শাহ্ আলী থানা যুবমহিলা লীগের নেত্রী পরিচয় দানকারী নিলুফা ইয়াসমিন নিলু, গুদারাঘাটের এইচ ব্লকে আরশাদ আলীর স্ত্রী ফরিদা, গুদারাঘাট এলাকার পিচ্চি মনির, গুদারা ঘাটের ফতে, মিরপুর মনিপুরের সোহাগ, মধ্য মনিপুর ফেন্সি সুমি ও তার বোন নিশি, কর্মাস কলেজের বস্তির আলামীন, রনি, মিরপুরের বিষু, ভাষানটেক এলাকার সালাম, বাবলু, রোকসান, রুপনগর দুয়ারীপাড়ার শাহাবুদ্দিন মোল্লা, সেকশন ৬ ব্লকের এর রহিম ও তার বোন মায়া রানী, পাইপ বাবুল এর মেয়ের জামাই রনি, সেকশন ৭ এর শফিক, এদের সবাই প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে নিবিঘ্নে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। জানা যায় এসব মাফিয়াদের সবার উপরে রয়েছে আল ইসলাম।