সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় এক পরিবারের ছেলে তৃতীয় লিঙ্গ হওয়াই বিভিন্ন দোষ চাপিয়ে তার পরিবারকে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে এলাকার মাতবরদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিষয়টি নিয়ে এলাকার মাতবররা এক সালিসি বৈঠক ডাকে। সালিসে তার (মনিরুলের) পরিবারকে এক মাসের মধ্যে ভিটামাটি বিক্রি করে গ্রাম ছাড়ার রায় দেওয়া হয়।
জানা যায়, চরঘাটিনা গ্রামের হাফেজ মিস্ত্রির ছেলে মনিরুল ইসলাম (২৭) প্রথমে পুরুষ হিসেবে জন্ম গ্রহণ করলেও ১৫ বছর বয়স হওয়ার পর থেকে তার হরমোনের পরিবর্তনের ফলে তার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। পরবর্তী সে তৃতীয় লিঙ্গে রুপান্তরিত হয়ে যায়। মনিরুলের তৃতীয় লিঙ্গের পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে এলাকার কেউ তার পরিবারের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতো না।
এ ব্যাপারে মনিরুলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সে সকলের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চেয়েছিল। কিন্তু সে ছোটবেলা থেকেই বৈষম্যের শিকার হয়। এলাকার লোকজন তাকে মেনে না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে সে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনের সাথে চলাচল এবং তাদের সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।
মনিরুল আরও জানান, সে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনের সাথে থাকায় এলাকার মানুষ তার পরিবারকে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করছে। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিষয়টি নিয়ে এলাকার মাতবররা এক সালিসি বৈঠক ডাকে। সালিসে তার (মনিরুলের) পরিবারকে এক মাসের মধ্যে ভিটামাটি বিক্রি করে গ্রাম ছাড়ার রায় দেয় এলাকার মাতবররা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রাম্য মাতবর শাহেদ হাজী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হাফেজ মিস্ত্রীর পরিবারকে চাপে রাখার জন্য সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে এক মাসের মধ্যে বসতভিটা বিক্রি করে গ্রাম ছাড়তে বলা হয়েছিল। যাতে তার ছেলে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনের সাথে চলাফেরা না করে।
উল্লাপাড়া মডেল থানার এস আই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই বিষয়ে মনিরুল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..