বগুড়ায় মাদকবিরোধী অভিযানে জব্দ করা মোট ফেনসিডিলের বোতলের সঙ্গে মামলায় দেখানো সংখ্যার মিল না থাকায় একজন সহকারী পুলিশ সুপারকে অন্য রেঞ্জে বদলি এবং অপর দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত ৩ এপ্রিলের ওই ঘটনার ২০ দিন পর বুধবার তাদের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
যে তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তারা হলেন- জেলার শিবগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী, শিবগঞ্জ থানার অধীন মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শাহিনউজ্জামান ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজাউদ্দৌলা। প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে ৮৮ বোতল ফেনসিডিল সোর্সের মাধ্যমে বিক্রির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বগুড়ায় পুলিশের মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ জানান, ওই তিন কর্মকর্তার মধ্যে এএসপি আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি এবং বকি দু’জনকে বগুড়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তদন্তে সম্পৃক্ত একটি সূত্র জানায়, শিবগঞ্জ সার্কেলের এএসপি আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গত ৩ এপ্রিল রাতে শিবগঞ্জের মোকামতলায় ঢাকাগামী ‘পিংকী পরিবহন’ নামে একটি বাসে তল্লাশি চালায়। অভিযানে তার সঙ্গে মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক শাহিনউজ্জামান ও উপ-পরিদর্শক সুজাউদ্দৌলাও ছিলেন।
অভিযানকালে তারা সাইফুল ইসলাম নামে এক যাত্রীর কাছ থেকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেন। তবে পরদিন অভিযানে থাকা উপ-পরিদর্শক সুজাউদ্দৌলা আসামি সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সময় জব্দ করা ফেনসিডিলের সংখ্যা ১১০ বোতল উল্লেখ করেন। বিষয়টি জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানার পর গোপনে তদন্ত করা হয়।
কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক শাহিনউজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, প্রত্যাহারের আদেশ তিনি এখনও পাননি। পেলে চলে যাবেন। পুরো বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বগুড়ায় পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ জানান, অভিযানে উদ্ধার হওয়া ফেনসিডিলের বোতলের সঙ্গে মামলায় উল্লেখ করা সংখ্যার গরমিল থাকার বিষয়টি জানার পর ঘটনাটি তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়। তিনি বলেন,প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ওই অভিযানে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বগুড়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ১৯৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করছে সঠিক কিন্তু সেখান থেকে সোর্সকে ৮৮ বোতল ফেনসিডিল দেওয়া হয়েছে,একাধিক সোর্স থাকায় তাদের চাহিদা অনুযায়ি ৮৮ বোতল ফেনসিডিল দেওয়া হয়। যদিও সোর্সকে মাদক দেওয়ার নিয়ম নেই। আর সোর্সকে যদি মাদক দেওয়া না হয় তাহলে মাদক পাচারের তথ্য পাওয়া যায় না এবং মাদক উদ্ধার করা সম্ভব হয় না বলে জানান তিনি।