মুঠোফোনের সনাক্তকরণ স্বতন্ত্র নম্বর যাকে বলা হয় ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুয়েপমেন্ট আইডেনটিটি বা সংক্ষেপে আইএমইআই (IMEI) নাম্বার।
পৃথিবীতে উৎপাদিত সকল মোবাইল ফোনের এই নম্বরটি আলাদা আলাদা বা স্বতন্ত্র। মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত সীম কার্ড পরিবর্তনের মাধ্যমে ফোন নম্বর পরিবর্তন করা গেলেও আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে ফোনের লোকেশন ট্রাকিং করে খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন যেমন উদ্ধার করা সম্ভব। তেমনি যেকোন অপরাধীকেও সনাক্ত ও গ্রেফতার করতে এই আইএমইআই নম্বর ট্রাকিংয়ের প্রক্রিয়া অবলম্বন করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে অপরাধীরাও অবলম্বন করছে ভিন্ন ভিন্ন পন্থা। ইদানিং মোবাইল ফোনের এই স্বতন্ত্র নম্বরও পাল্টে ফেলছে তারা। এমন অপরাধের সঙ্গে জড়িত চক্র বাংলাদেশেও সক্রিয় রয়েছে। তাদেরই ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার ( ১৮ ফেব্রুয়ারি) র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর পৃথক এলাকা থেকে চক্রের এই ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) র্যাবের পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার বেলা আনুমানিক ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন পূর্ব নাখালপাড়া ও পল্টন থানাধীন গুলিস্তান পাতাল মাকের্ট এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনকারী চক্রের ০৬ সদসকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. সফিকুল ইসলাম (২৫), মো. মাসুদ আহমেদ রানা (৩৮), মো. ইমন (২৩), মো. সিরাজ আলী (৩০), রানা হাজরা (২৬) ও মো. আল আমিন (১৯)।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে একটি কম্পিউটার (১টি মনিটর, ১টি সিপিইউ, ০১টি মাউস), ৬টি ডাটা ক্যাবল, ১টি অ্যাডাপ্টার, ৭ টি মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তনের সিএম২ ডুংগল (CM2 DONGLE) সফটওয়্যার, ২০ টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৬৬ হাজার ৮৫ টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সিএম২ ডুংগল সফটওয়্যারের মাধ্যমে কৌশলে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করে চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরির্বতন করে বিভিন্ন অপরাধীদের অপরাধে সহায়তা করে আসছিল বলে জানা যায়।গ্রেফতারৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও র্যাবের সংবাদ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব নিয়মিত জঙ্গি, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, খুনি, ধর্ষক, দেশদ্রোহী, সাইবার অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার চক্রের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে।