এদিকে মামলার জালে বন্ধ রয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ও। এসব অর্থসংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করতে এনবিআরকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। শিশুসন্তান কোলে মা, অসুস্থ ব্যক্তি, বৃদ্ধ কিংবা তরুণ কেউই বাদ পড়ছেন না এই ভোগান্তি থেকে।
শুধু বহু যুগের অপেক্ষায়ই নয়, বিচারালয়ের ঘাটে ঘাটে পয়সা গুনতে হয় বিচারপ্রার্থীদের। আদালতের দরজায় কড়া নাড়তেই নিঃস্ব হচ্ছেন তারা। ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ জানান, এখানে তারিখের পর তারিখ পড়ছে। আর টাকা ছাড়া তো কেউ হাঁটে না। এক জমি রক্ষার জন্য আরেক জমি বিক্রি করতে হয়।
দীর্ঘসূত্রতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে বাড়ছে জামিন জালিয়াতি, প্রতারণা আর ভুয়া মামলায় হয়রানির মতো অপরাধ। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, আদালতের স্টাফরা জালিয়াতির সঙ্গী হচ্ছেন। একই সঙ্গে তারা কয়েক আইনজীবীর সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ কারণে বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এ ধরনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে প্রতারণা কমে আসবে। একটি বেসরকারি সংস্থার সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, বিচারিক সেবা খাতে দুর্নীতির শিকার হয়েছে ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, মামলাজট কমাতে শিগগিরই ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া রয়েছে এবং খুব দ্রুতই এটি শুরু হবে।
এদিকে বিচার বিভাগের চলমান দীর্ঘসূত্রতাকে পুঁজি করে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী হাজার কোটি টাকার এসব রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ।
রাজস্ব সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনাল আর উচ্চ আদালতে প্রায় ঝুলে থাকা ২৭ হাজারের বেশি মামলা নিষ্পত্তিতে সংস্থাটিকে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।