গাঁজা সেবনের অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরও ১০ আসামিকে সাজা না দিয়ে ১ বছর হাসপাতালের সেবামূলক কাজে অংশ নেয়াসহ ৮ টি শর্ত পালনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্যথায় তাদেরকে সাজা ভোগ করতে হবে। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.আবু সাঈদ এই নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ পুলিশ লালপুর উপজেলার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের একটি আমবাগান থেকে গাঁজা সেবনের অভিযোগে ১০ তরুণকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে এসআই আলী আযম বাদী হয়ে মাদক আইনে মামলা করেন। মামলাটি বিচারের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.আবু সাঈদের আদালতে আসে।বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে গাঁজা সেবনের অভিযোগ স্বীকার করেন। এ অবস্থায় আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করেন এবং দণ্ডাদেশ না দিয়ে ৮ টি শর্তে এক বছরের জন্য প্রবেশনে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
শর্তগুলো হচ্ছে, আসামিদেরকে প্রতি ১৫ দিনে এক দিন করে পাবনা সদর হাসপাতালে সেবামূলক কাজে অংশ নিতে হবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। আসামিরা নিজ এলাকায় রাস্তার পাশে ১০ টি করে ফলজ ও ১০টি করে বনজ গাছ রোপণ করবেন। আসামীদের প্রবেশন চলাকালীন তাদের বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশুনা ও ভরন-পোষণের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। সর্বপরি তারা মাদক সেবন করবেন না ও ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন।
উপরোক্ত শর্তে আদালত তাদের কাছ থেকে এক বছরের জন্য হলফনামা নেন। প্রবেশন পাওয়া আসামিরা হচ্ছে পাবনা জেলার আতাইকুলা থানার আকরাম হোসেন (৩১), সোহেল রানা (৩৫), শহীদ শেখ (৫৫), জাহাঙ্গীর আলম (৩৭), লিটন শেখ (৪৫), মো.সিদ্দিক (৪৫), আরিফুল ইসলাম (২৫), আসলাম হোসেন (৩২), নাজমুল হোসেন (৩০) ও মেহেদী হাসান (৩০)। আসামিরা ৮টি শর্ত মেনে চলছেন কি না তা পর্যবেক্ষণের জন্য পাবনার প্রবেশন কর্মকর্তাকে আদালত দায়িত্ব অর্পণ করেছেন।
প্রবেশন প্রাপ্ত আসামি আকরাম হোসেন বলেন, আমরা সঙ্গ দোষে মাদক সেবন করেছিলাম। আদালতে তা স্বীকারও করেছি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের সাজা না দিয়ে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা আদালতের দেয়া শর্ত মেনে চলার চেষ্টা করবো। বিশেষ করে মাদক থেকে দুরে থাকবো। হাসপাতালের রোগীদের সেবা করে মানবিক হওয়ার চেষ্টা করবো।